সন্তান জন্মের পর মরতে বসেছিলেন সেরেনা! 

সন্তান জন্মের পর মরতে বসেছিলেন সেরেনা! 

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

টেনিস কোর্টে একের পর এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে উড়িয়ে দেন তিনি। ভক্ত-সমর্থকেরা তাকে এভাবেই দেখতে অভ্যস্ত। কিন্তু  গেল বছরের সেপ্টেম্বরে কোর্টের বাইরে তাকে এমন এক লড়াইয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছিল, যেখানে রীতিমতো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। এতক্ষণে হয়তো বুঝে নিয়েছেন এই তিনি আসলে কে।

ঠিকই ধরেছেন, টেনিসের রানি সেরেনা উইলিয়ামস।

সম্প্রতি এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমে মাস পাঁচেক আগে মেয়ে অ্যালেক্সিস অলিম্পিয়ার জন্ম নেওয়ার সময়কার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন সেরেনা।  ২৩ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালকিন লিখেছেন, ‘‘অলিম্পিয়া জন্মের পর প্রায় মরেই যাচ্ছিলাম আমি। নেহাত ভাগ্যটা খুব ভাল ছিল।

যদিও গর্ভাবস্থায় সে রকম কোনও সমস্যা হয়নি। আমার মেয়ে ইর্মাজেন্সি সি সেকশনে হয়। জন্ম নেওয়ার সময় ওর হৃৎস্পন্দনের গতি হঠাৎ কমে গিয়েছিল। এতে আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। ’’ কিংবদন্তি মার্কিন টেনিস খেলোয়াড় আরো লিখেছেন, ‘‘অস্ত্রোপচারটাও ভালমতোই হয়েছিল। কিছু বোঝার আগেই দেখি অলিম্পিয়া আমার কোলে। এ রকম অসাধারণ অভিজ্ঞতা আমার আগে কখনও হয়নি। তবে মা হওয়ার পরের ছয় দিন চরম অনিশ্চয়তায় কেটেছে। ’’  

কী সেই অনিশ্চয়তা সেটাও সেরেনা খোলাখুলি লিখেছেন, ‘‘সমস্যাটা শুরু হয় পালমোনারি এম্বোলিজম দিয়ে। এটা এমন একটা অবস্থা যেখানে ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। আগেও আমার এই সমস্যা হয়েছে। তাই ভয়ে ভয়ে থাকতাম আবার না সমস্যাটা দেখা দেয়। তাই যখনই নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হতো, এক সেকেন্ডও দেরি না করে নার্সদের ডাক দিতাম। ’’

পরবর্তীতে সমস্যাটা আরও গুরুতর রূপ নেয়। মার্কিন কৃষ্ণকলি লিখেছেন, ‘‘এর পরেই জটিল কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। আমার ভাগ্য ভাল সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। প্রথমে ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার জন্য আমার প্রচণ্ড কাশি হচ্ছিল। তাতে অস্ত্রোপচারের সময় আমার শরীরের সেলাই করা অংশটা  উন্মুক্ত হয়ে যায়। ফের অস্ত্রোপচার করতে হয়। সেখানে চিকিৎকরা আবিষ্কার করেন আমার তলপেটে একটা বড় অংশে রক্ত জমাট বেঁধে আছে। চিকিৎসকরা এর পরে চেষ্টা করতে থাকেন যাতে জমাট বাঁধা রক্তটা আমার ফুসফুসে না পৌঁছায়। শেষ পর্যন্ত যখন আমি হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরলাম, তত দিনে মাতৃত্বের ছয় সপ্তাহ আমাকে বিছানাতেই কাটাতে হয়েছে। ’’ এর আগে ২০১১ সালে একই সমস্যায় পড়েছিলেন সেরেনা। মিউনিখের একটি রেস্তোরাঁয় কাচ দিয়ে পা কেটে গেলে  পালমোনারি এম্বোলিজমে ভুগতে শুরু করেন তিনি।  সে সময় প্রায় এক বছর চিকিৎসা সেবা গ্রহণের পর সুস্থ হন তিনি।

৩৬ বছর বয়সী তারকা ধন্যবাদ দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে, ‘‘যেভাবে পেশাদারি দক্ষতায় হাসপাতালের সবাই সাহায্য করেছেন, সেটা না থাকলে আজ আমি এই জায়গায় থাকতাম  না। ’’ পাশাপাশি  বিশ্বজুড়ে গর্ভবতী নারীদের মাঝে সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন সেরেনা।

আপাতত মাতৃত্বের দায়িত্ব সামলানো শেষ। এখন নিজেকে ফিরে পাওয়ার পালা। সাবেক ওয়ার্ল্ড  নাম্বার ওয়ানকে আবারো স্বমহিমায় দেখতে মুখিযে আছেন তার ভক্তরাও । চলতি মাসের শুরুতে বড় বোন ভেনাসের সঙ্গে ফেড কাপে জুটি বেঁধেছিলেন সেরেনা।  যদিও নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে যান দুই সহোদরা। এই ধাক্কা সামলে নব উদ্দীপনায় কোর্টে ফেরার লড়াইয়ে সেরেনা কত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারেন, এখন সেটাই দেখার বিষয়।  

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

সম্পর্কিত খবর