একে একে ট্রাম্পকে ছেড়ে যাচ্ছেন কাছের মানুষগুলো! কাউকে আবার পদচ্যুত করা হয়েছে। গত মাসেই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের আন্ডার সেক্রেটারি টম শ্যানন পদত্যাগ করেন। এবার ট্রাম্পকে ছেড়ে গেলেন প্রেসিডেন্টের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোগীদের একজন আর দীর্ঘদিনের উপদেষ্টা হোপ হিকস। তাকে 'হোপস্টার' নামে ডাকতেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হোপ হিকসকে মনে করা হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সহযোগীদের একজন, যে তার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন এবং অনেক সময় সেটি পাল্টাতেও পারেন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ এমনকি ব্যক্তিগত বিষয়ও হোপস্টারের সঙ্গে ট্রাম্প শেয়ার করতেন বলে মনে করা হতো। তাদেরকে একসঙ্গে ডিনারেও দেখা গেছে।
পদত্যাগ প্রসঙ্গে হিকস বলছেন, হোয়াইট হাউজ থেকে যা কিছু পাওয়ার, সবই তার পাওয়া হয়ে গেছে। ২০১৫ সাল থেকেই মিস্টার ট্রাম্পের সাথে কাজ করে আসছিলেন ২৯ বছর বয়সী সাবেক এই মডেল। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে এই পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন।
নির্বাচনী প্রচারের সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করা হোপ হিকসকে হোয়াইট হাউজের কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর বা যোগাযোগ পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো গত বছর সেপ্টেম্বরেই।
তবে হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডারস বলেছেন মিস হিকস কখন প্রশাসন থেকে বিদায় নেবেন সেটি এখনো পরিষ্কার নয়।
এর আগে মঙ্গলবার হাউজ ইন্টিলেজেন্স কমিটির কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং খবর পাওয়া যাচ্ছে যে সেখানে তিনি কখনো কখনো ট্রাম্পের পক্ষে নির্দোষ মিথ্যা বলার কথা স্বীকার করেছেন।
রাশিয়ার সঙ্গে ট্রাম্প শিবিরের সম্পর্ক বিষয়ে তদন্তে হোপ হিকস একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হতে যাচ্ছেন বলে মনে করা হয়।
কে এই হোপ হিকস?
কানেক্টিকাটের গ্রীনউইচের হোপ হিকস শিক্ষাজীবনে খেলাধুলাতে বেশ নামডাক তৈরি করেন। টিনএজার বয়স থেকেই তিনি মডেলিং শুরু করেন এবং একবার রালপ লরেনের মডেল হিসাবেও কাজ করেছেন।
আগে তিনি একটি বেসরকারি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন, যে প্রতিষ্ঠানটি ইভানকা ট্রাম্পের ফ্যাশন ব্রান্ড এবং ট্রাম্প প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রোপার্টি ব্রান্ডগুলো দেখাশোনা করে।
২০১৪ সালে তিনি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনে যোগ দেন। এর পরের বছরই ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে নির্বাচনী প্রচারণা দলে যুক্ত করেন, যদিও তার রাজনৈতিক কোন অভিজ্ঞতা ছিল না।
তাকে 'হোপস্টার' নামে ডাকতেন ট্রাম্প।
তবে কিছুদিন আগে গৃহ নির্যাতনের অভিযোগে পদত্যাগ করা হোয়াইট হাউজ কর্মী রব পোর্টারের ঘটনায় তার নাম আসে। বলা হয়, সে সময় হিকস রব পোর্টারের সঙ্গে প্রেম করছিলেন।
পোর্টারের পক্ষে সাফাই গেয়ে একটি প্রাথমিক স্টেটমেন্টও তৈরি করেছিলেন হিকস, যা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অসন্তুষ্ট করে তুলেছিল বলে জানা গেছে।
এদিকে ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর থেকেই প্রশাসনে পদত্যাগ ও পদচ্যুতির ঘটনা লেগেই আছে। এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী টম প্রাইস, ট্রাম্পের প্রধান পরামর্শক স্টিভ ব্যানন, হোয়াইট হাউজের যোগাযোগ পরিচালক অ্যান্থনি স্কারামুচি, চিফ অব স্টাফ রেইন্স প্রিবাস, প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার, এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন, সরকারি কৌঁসুলি প্রীত ভারারাসহ আরও অনেকে ট্রাম্প প্রশাসন থেকে বিদায় নেন। এদের কেউ কেউ নানা কারণে নিজে পদত্যাগ করেন, কাউকে পদচ্যুত করা হয়।
