বিধ্বস্ত বিমান: এখনো সন্ধান মেলেনি শ্রীপুরের পাঁচজনের

বা থেকে সোনা মনি, মেহেদী, অন্নি প্রিয়ক ও অন্নির একমাত্র সন্তান তামারা প্রিয়ন্ময়ীI টেলিভিশনে দেখানো আহত ব্যক্তিটি অনেকটা মেহেদীর মতো দেখতে (ইনসেটে )।

বিধ্বস্ত বিমান: এখনো সন্ধান মেলেনি শ্রীপুরের পাঁচজনের

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর

নেপালে ত্রিভুবন বিমান বন্দরে সোমবার দুপুরে বিধ্বস্ত হওয়া ইউএস-বাংলার বিমানে ছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামের প্রিয়ক ও মেহেদী হাসান দম্পতির পাঁচ সদস্য। তারা একই পরিবারের সদস্য। প্রিয়ক ও মেহেদী হাসান সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই।   তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে এখনো জানতে পারেনি তাঁদের পরিবার।

কেউ বলছেন তিনজন নিহত হয়েছেন। কেউ বলছেন দুইজন। অনেক উদ্বেগ-উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন তাঁরা।  অজানা শঙ্কায় বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছাঁয়া।

স্বামী-সন্তানকে নিয়ে নেপালের কাঠমাণ্ডুর উদ্দেশ্যে গতকাল সোমবার ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সে রওনা হয়েছিলেন অন্নি প্রিয়ক ও সোনা মনি (ফেসবুকে এই নামে পরিচিত)। বিমানে ওঠার আগে এয়ারপোর্টে তোলা দুইটি ছবি ফেসবুকে আপলোড করে সবার কাছ থেকে বিদায় নেন অন্নি। দোয়া চান। ওই উড়োজাহাজটি নেপালে অবতরণ করতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ৭১ জন আরোহী নিয়ে যাত্রা করা বিমানটির অধিকাংশ যাত্রী প্রাণ হারান। উড়োজাহাজটির ২২ আরোহীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্য নয়জন বাংলাদেশি। তবে শ্রীপুরের প্রিয়ক ও মেহেদী দম্পতির কেউ ওই নয়জনের মধ্যে আছে কিনা তা এখনো জানতে পারেনি তাদের পরিবার।

news24bd.tv

বা থেকে সোনা মনি, এফ এইচ প্রিয়ক, অন্নি প্রিয়ক ও অন্নির একমাত্র সন্তান তামারা প্রিয়ন্ময়ীI

 প্রিয়ক ও মেহেদী হাসান দম্পতির বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুরের নগর হাওলা গ্রামে। ওই ফ্লাইটে থাকা এই দুই পরিবারের পাঁচ সদস্য হলেন, উপজেলার নগরহাওলা গ্রামের মৃত শরাফত আলীর ছেলে এফ এইচ প্রিয়ক (৩২), তাঁর স্ত্রী এ্যালমুন নাহার অন্নি (২৫), তাদের এক মাত্র সন্তান তামারা প্রিয়ন্ময়ী, নগরহাওলা গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান অমিও (৩৩) ও তাঁর স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা (সোনা মনি) ২৫। ফারুক পেশায় একজন ফটোগ্রাফার, মেহেদী হাসান পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। প্রিয়ক ও মেহেদী হাসান সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই।  

তাঁরা পরিবার নিয়ে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে নেপাল যাচ্ছিলেন বলে নিশ্চিত করেন তাঁর বন্ধু ফরহাদ হক। বিমান বিধ্বস্তের খবরে নগরহাওলা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনের বুক ফাটা কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসী কামনা করছে তারা সবাই জীবিত ফিরে আসবে। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার ওসি আসাদুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনা কবলিত পরিবারের খোঁজখবর নেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।

news24bd.tv

প্রিয়কদের বাড়িতে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা। দুঃসংবাদ নয়, একটি সুসংবাদের প্রতীক্ষায় স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

এদিকে দুর্ঘটনার পর থেকে ফেসবুকে অনেকে খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

অন্নি প্রিয়ক ও এফ এইচ প্রিয়কের ফেসবুক ওয়ালে তাদের স্বজন ও বন্ধুরা একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছেন। জানতে চাইছেন তারা কেমন আছেন? এমন সময় তাদের একটি পোস্ট হয়ত অনেকের বুক থেকে ভারী পাথর নামিয়ে দিতে পারে। তবে কয়েক ঘণ্টায়ও তেমন কোন পোস্ট চোখে পড়েনি।

এদিকে টেলিভিশনে অন্নি ও মেহেদীকে দেখা গেছে বলে দাবি করেছেন অনেকে। টেলিভিশন থেকে নেওয়া এমন কিছু স্ক্রিনশটও ফেসবুকে শেয়ার করেছেন কেউ কেউ।  news24bd.tv

ফেসবুকে অরুণ চন্দ্র নামের একজন দাবি করেছেন এই ছবিতে অন্নি প্রিয়ক কাঁদছেন এবং মেহেদী তাকে শান্তনা দিচ্ছেন।

অর্থাৎ, তারা বেঁচে আছেন। তবে অন্যদের কোন খবর পাওয়া যায়নি। জানা যায়নি এফ এইচ প্রিয়ক, সোনা মনি ও ছোট্ট শিশু  প্রিয়ন্ময়ী কোথায় ও কেমন আছে।

সম্পর্কিত খবর