কাউকে না জানিয়েই নেপাল গিয়েছিলেন সাংবাদিক ফয়সাল

নিহত সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদ সরদার [ছবি: ফেসবুক]

কাউকে না জানিয়েই নেপাল গিয়েছিলেন সাংবাদিক ফয়সাল

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

নেপালে ঘুরতে যাওয়ার কথা কাউকে বলেননি ফয়সাল আহমেদ সরদার। অফিস, বাসা, আত্মীয়-স্বজন কাউকে না জানিয়েই কাঠমান্ডু গিয়েছিলেন তিনি। ঢাকায় বাসা থেকে বের হওয়ার সময় বড় বোন শিউলীকে বলেছিলেন- ‘ঢাকার বাইরে যাচ্ছি। ’ এটাই পরিবারের কারো সঙ্গে ফয়সালের শেষ কথা ছিল।

শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার সামসুদ্দিন সরদার ও সামসুন্নাহার বেগমের বড় ছেলে ফয়সাল। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্য তিনি দ্বিতীয়। ২০০৪ সালে ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাসের পর ঢাকা তিতুমির কলেজে এইচএসসি এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন ফয়সাল।

ব্যক্তি জীবনে অবিবাহিত ফয়সাল বৈশাখী টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন।

ঢাকার ধানমন্ডি ১৫ নম্বরে বড় বোন শিউলী আক্তারের বাসায় থাকতেন। গ্রামের বাড়িতে খুব কম আসতেন ফয়সাল। সর্বশেষ গত ৮-৯ মাস আগে পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি।

অফিস থেকে পাঁচ দিনের ছুটি নিলেও নেপাল যাওয়ার বিষয়ে অফিসকে জানাননি ফয়সাল। পরিবারের কেউ জানে না তিনি নেপাল গেছেন। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে শরীয়তপুরের ডামুড্যায় শোকের মাতম শুরু হয় স্বজনদের।

ছেলের শোকে ফয়সালের মা সামসুন্নাহার বেগম অচেতন প্রায়। ফয়সালের বাবা সামসুদ্দিন সরদার ‘বাবা, আমার বুকে আসো বাবা’ বলে বিলাপ করছেন। মায়ের হাতে রান্না করা গরুর মাংসের খিচুড়ি খুবই পছন্দ ছিল ফয়সালের। মা সামসুন্নাহার বেগম মাঝে মাঝে জ্ঞান ফিরে পেলে সেই খিচুড়ির কথা মনে করেই আহাজারি করছেন।

ফয়সালের বাবা সামসুদ্দিন সরদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলে যে নেপাল গিয়েছে আমরা কেউ জানতাম না। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার অনেক পরে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারি ফোন দিয়ে ফয়সাল কোথায় জানতে চান। এরপর তিনি বড় মেয়েকে ফোন দেন। তখন বড় মেয়ে জানায়- ফয়সাল ঢাকার বাইরে যাওয়ার কথা বলে সকালে বাসা থেকে বের হয়েছে। এরপর আর যোগাযোগ হয়নি। রাতে তারা নিশ্চিত হন নেপালে বিধ্বস্ত বিমানে ফয়সাল ছিল।

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর