‘খালেদা মুক্ত হলেই জন‌স্রো‌তে ভে‌সে যাবে সরকার’

মির্জা ফাখরুল।

‘খালেদা মুক্ত হলেই জন‌স্রো‌তে ভে‌সে যাবে সরকার’

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ভোটারবিহীন বর্তমান অবৈধ, স্বৈরাচারি সরকারের বিরুদ্ধে দেশবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, আলোচনার সময় শেষ প্রায়। রাজপথই এখন একমাত্র বিকল্প। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমেই এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে হবে।

ফ্যা‌সিস্ট অপশ‌ক্তি‌কে পরা‌জিত ক‌রে জনগ‌ণের সরকার প্রতিষ্ঠা ক‌রার  আহবান জানিয়ে ফখরুল বলেন,  আমাদের উঠে দাঁড়াতে হবে। এখন জে‌গে উঠার সময়। তাই আসুন, দলমত নি‌র্বি‌শে‌ষে অবৈধ ক্ষমতাসীন‌দের বিরু‌দ্ধে সোচ্চার হই, রাজপ‌থে নে‌মে আসি।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্ট’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত খালেদা জিয়া মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির মধ্যে বিভেদ রয়েছে এমন বানোয়াট প্রচারে সরকার বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করছে অভিযোগ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন জেলে যাওয়ার পর তারা (আ.লীগ) বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করতে চাইছে যে বিএনপি ভেঙে যাচ্ছে।

বাংলায় এক‌টি প্রবাদ আছে ‘শকু‌নের দোয়ায় গরু ম‌রে না’। তাই বলতে চাই- খা‌লেদা জিয়া মিথ্যা মামলায় কারাগা‌রে যাওয়ার পর বিএন‌পির সকল পর্যা‌য়ের নেতাকর্মী এখন আরও বে‌শি ঐক্যবদ্ধ ও সাংগঠ‌নিকভা‌বে শ‌ক্তিশালী।

তিনি বলেন, জনগণ‌কে সম্পৃক্ত করে যা‌চ্ছি। আর এতেই সরকার ভয় পা‌চ্ছে। তারা বি‌ভিন্ন কৌশ‌লে বিএন‌পির ম‌ধ্যে বি‌ভেদ সৃ‌ষ্টি কর‌তে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রে‌খে‌ছে।

দেশে আইন নেই দাবি করে বিএন‌পির মহাস‌চিব ব‌লেন, কার কা‌ছে মু‌ক্তি চাইব। আমরা খা‌লেদা জিয়া‌কে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত কর‌ব। ত‌বে আইনও তো নাই। দে‌শে নির‌পেক্ষ বিচার‌ বিভাগ নাই, আদালত নাই। তাই আমা‌দের সাম‌নে মু‌ক্তির একমাত্র পথ হ‌চ্ছে রাজপ‌থ। রাজপ‌থের আন্দোলন।

এসময় তিনি সোমবার গ্রেপ্তার হওয়া জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমিরসহ সকল রাজব‌ন্দির মু‌ক্তি দা‌বি ক‌রেন।

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, এখন প্রতিবাদ করার সময়, আলোচনার সময়ও প্রায় শেষ হ‌য়ে গে‌ছে। কারণ বর্তমান সরকা‌রের নতুন অস্ত্র ‘কৌশল’, তারা মামলা দি‌য়ে বি‌রোধী রাজ‌নৈ‌তিক দলগু‌লো‌কে অকার্যকর ক‌রে রাখতে মরিয়া।

সরকার জনস্রোতে ভেসে যাবে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, খা‌লেদা জিয়া কারাগার থে‌কে বের হ‌লে এই সরকার জন‌স্রো‌তে ভে‌সে যাবে। তাই ভ‌ীত হয়ে ছলচাতুরি ক‌রে দেশনেত্রীকে আট‌কে রাখার চেষ্টা কর‌ছে সরকার। যার ধারাবা‌হিকতায় তারা (সরকার) ক্ষমতায় টি‌কে থাক‌তে চতুর্দি‌কে ষড়যন্ত্র কর‌ছে।

গ্রেপ্তারের পর সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ‘মনুষ্যত্বহীন’ আচরণ করছে অভিযোগ করেন ফখরুল।

বলেন, কারাগারে নিয়ে রিমান্ডের মাধ্যমে নজিরবিহীন নির্যাতন করা হচ্ছে নেতাকর্মীদের। সম্প্রতি গ্রেপ্তারের পর ছাত্রদল নেতা জাকির হোসেন মিলনকে রিমান্ডে নিয়ে ‘নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে’।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট গৌতম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সুকোমল বড়ূয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ড, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জন গমেজ, প্রান্তিক জনশক্তিবিষয়ক সম্পাদক অর্পণা রায়, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী ও দেবাশীষ রায় মধু প্রমুখ।

সম্পর্কিত খবর