নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ইউএস-বাংলার পাইলট আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানমের অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। তার লাইফসাপোর্ট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আফসানার শরীরের অন্য সবকিছু কাজ করলেও ব্রেইন কাজ করছে না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার জন্য বুধবার সকালে সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক বদরুল আলম বলেন, আবিদ সুলতানের স্ত্রীর ব্রেইন ছাড়া সব কিছুই কাজ করছে। এছাড়া তার বায়োকেমিক্যাল প্যারামিটারে পরিবর্তন এসেছে। তার সোডিয়াম লেভেল বেড়ে গেছে। এটি এ মুহূর্তে একমাত্র শঙ্কার কারণ।
তিনি বলেন, আফসানা খানমের মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বিঘ্ন ঘটায় আমরা সিটিস্ক্যান করার পর অস্ত্রোপচার করি। কিন্তু তিনি আবার স্ট্রোক করেন। ফলে আমরা আরেকটি অপারেশন করি। এর পর আমরা তার মাথার খুলি খুলে রাখি। এটি তখনই করা হয়, যখন কারো মস্তিষ্কের ওপর অতিরিক্ত চাপ যায়।
''যেহেতু তার শরীর স্বাভাবিকভাবে চলছে, আমরা তাকে মৃত বলতে পারি না। আমরা তার চিকিৎসা চালিয়ে যাব'', বলেন তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছিল, ক্যাপ্টেন আবিদের স্ত্রীর অবস্থা সংকটাপূর্ণ। তবে তার কিডনি, হার্ট, লিভার সব সচল রয়েছে। তার রক্তচাপ ১২০/৮০। কিন্তু তার ব্রেন স্বাভাবিক রেসপন্স করছে না। যন্ত্রের সাহায্যে তার শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে।
১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ক্রুসহ ৫১ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর বিমানটির প্রধান পাইলট আবিদ আহতাবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরদিন সকালে কাঠমান্ডুর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়। আবিদের এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি স্ত্রী আফসানা। স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। প্রলাপ বকতে থাকেন। কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। আবিদ তাকে সঙ্গে না নিয়ে একা চলে যেতে পারে না- বার বার শুধু এমন কথাই বলছিলেন। স্বামীর শোকে মনস্তাত্ত্বিক চাপে রোববার নিজ বাসায় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন তিনি। গুরুতর অবস্থায় আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আফসানাকে।
