নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটে লড়বেন বাংলাদেশি মঈন

হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে এটর্নী মঈন চৌধুরী।

নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটে লড়বেন বাংলাদেশি মঈন

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস এলাকা নিয়ে গঠিত ‘স্টেট সিনেট-১৩’ আসন থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান এটর্নী মঈন চৌধুরী। কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতা মঈন চৌধুরী অপেক্ষায় রয়েছেন কাউন্টি ডেমক্র্যাটিক পার্টির অনুমোদনের। এক দশকেরও অধিক সময় ধরে এই এলাকার ডেমক্র্যাটদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত মঈন চৌধুরীর এ ঘোষণায় প্রবাসীদের মধ্যেও বেশ জাগরণ সৃষ্টি করেছে।

একইসাথে, এই আসনের নির্বাচিত স্টেট সিনেটর হোযে প্যারাল্টা সম্প্রতি ডেমক্র্যাটিক পার্টি ত্যাগ করে ‘ইন্ডিপ্যান্ডেন্ট ডেমক্র্যাট’ হওয়ায় এটর্ণী মঈন চৌধুরীর সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে।

কারণ, দক্ষিণ এশিয়ান, এমনকি এশিয়ানদের মধ্য থেকে এখন পর্যন্ত কেউই প্রার্থিতার ঘোষণা দেয়নি।

উল্লেখ্য, এই আসনের মোট জনসংখ্যার ৬৮.৬% হিসপ্যানিক তথা সেন্ট্রাল আমেরিকার বিভিন্ন দেশের স্প্যানিশ ভাষাভাষী, ২৩.৯% হলেন এশিয়ান। তালিকাভুক্ত ভোটারের হিসাব অনুযায়ী এশিয়ানরা হলেন ৩৯% এবং হিসপ্যানিকরা ৫৫%। আর ইউরোপের ৫.৭%।

এশিয়ানরা ঐক্যবদ্ধ হলেই মেক্সিকানদের সমর্থন লাভে সক্ষম হবেন মঈন চৌধুরী। তাহলেই এ বিজয় ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না।

এই আসনটি বহু বছর ধরেই হিসপ্যানিকদের দখলে থাকলেও অভিবাসীদের অধিকার ও মর্যাদার প্রশ্নে আগের সিনেটরদের যে ধরনের বলিষ্ঠ ভুমিকায় অবতীর্ণ হওয়া দরকার ছিল, তা ঘটেনি বলে সকলেই ক্ষুব্ধ।

কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের প্রতিষ্ঠাতা ও মার্কিন কংগ্রেসে ডেমক্র্যাটিক ককাসের চেয়ার কংগ্রেসম্যান যোসেফ ক্রাউলিও বেশ কবছর থেকেই প্রায় একই আসনে জয়ী হচ্ছেন। এটর্নী মঈন চৌধুরীকে তিনি যথেষ্ঠ গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। ডেমক্র্যাটিক পার্টির কাউন্টি থেকে অনুমোদন লাভে সক্ষম হলে কংগ্রেসম্যান ক্রাউলিও এটর্নী মঈনের পক্ষে মাঠে নামতে দ্বিধা করবেন না বলে জানা গেছে।

পেশাগতভাবে অভিবাসন আইনে দক্ষ এটর্নী মঈন চৌধুরী সর্বস্তরের অভিবাসীর সমস্যা-সংকটে ঝাঁপিয়ে পড়েন। অন্য ধরনের আইনগম সহায়তার জন্যও তার ল’ফার্মের ভুমিকা ইতিমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে। ডেমক্র্যাটিক পার্টির সর্বস্তরে তার বিচরণ। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে সঙ্গে নিয়ে এই জ্যাকসন হাইটসে সমাবেশ করেছেন এটর্নী মঈন চৌধুরীসহ শীর্ষস্থানীয় ডেমক্র্যাটরা। ইউএস সিনেটে ডেমক্র্যাটিক পার্টির নেতা সিনেটর চাক শুমার (নিউইয়র্ক) এর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এটর্নী মঈনের। নির্বাচনে বিজয়ের ক্ষেত্রে এসব কানেকশন অপরিসীম ভুমিকা রাখে বলে নির্বাচন বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন।

বহুল আলোচিত ড্রিম এ্যাক্ট মার্কিন কংগ্রেসে পাশ না হওয়ায় ৮ লক্ষাধিক ড্রিমার (শিশু-কৈশোর অবস্থায় মা-বাবার সাথে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর এখন পর্যন্ত যারা বৈধতা পায়নি) এর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সংখ্যা রয়েছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে। এদের বসবাস নিরাপদ করতে এবং তারা যাতে কলেজ-ভার্সিটিতে অধ্যয়নের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পায়, সে ধরনের একটি বিল স্টেট সিনেটে পাশে সর্বশক্তি নিয়োগের অঙ্গিকার করেছেন এটর্নী মঈন।

এছাড়া, অভিবাসীদের মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার যে হুমকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হরদম বলে বেড়াচ্ছেন-তা রুখে দিতেও স্টেট সিনেটে কাজ করবেন বলে উল্লেখ করেছেন মঈন চৌধুরী।

প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রাথমিক ঘোষণার পরই প্রবাসী বাংলাদেশি এবং দক্ষিণ এশিয়ানরা বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মঈন চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর