বীরপ্রতীক কাঁকন বিবি আর নেই

খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবি।

বীরপ্রতীক কাঁকন বিবি আর নেই

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

না ফেরার দেশে চলে গেলেন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা কাঁকন বিবি। বুধবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন একাত্তরের এই নারী বীরকন্যা। (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ঝিরাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা কাঁকন বিবির মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মাহবুবুল হক জানিয়েছেন, শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত সোমবার এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শতবর্ষী কাকন বিবি। এর আগে গত বছর জুলাইয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েকদিন হাসপাতালে ছিলেন তিনি।

কাকন বিবির জন্ম ১৯১৫ সালে বলে জানিয়েছেন তার ভাগ্নে ইনছান আলী। মেঘালয়ের নেত্রাই হাসিয়া পল্লীতে তিনি জন্মেছিলেন বলে সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবু সুফিয়ান জানান।

কাকন বিবির স্বামী সাঈদ আলীও প্রয়াত। তার গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারবাজার থানার জিরারগাঁও গ্রামে।

হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. দেবব্রত রায় বলেন, হাসপাতালে তিনি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. নাজমুল ইসলামের অধীনে ভর্তি হন এবং আইসিইউতে ডা. সব্যসাচী রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

গত বছরের ২১ জুলাই ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসা নিয়েছিলেন কাকন বিবি। কয়েকদিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরেছিলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

তিনি ১৯৭১ সালে তিন দিনের কন্যা সন্তান সখিনাকে রেখে যুদ্ধে যান। মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ করতে গিয়ে তিনি রাজাকারদের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হন। তিনি কেবল মুক্তিবাহিনীর গুপ্তচর হিসেবেই কাজ করেননি, সেই সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধেও অংশ নেন।

১৯৭১ এর জুনে পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন কাঁকন বিবি। তাদের বাঙ্কারে দিনের পর দিন অমানুষিকভাবে নির্যাতন সহ্য করতে হয় তাঁকে। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তখনই কাঁকন বিবি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেন। জুলাই মাসে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর