নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে বিমানবালাদের নগ্ন করে তল্লাশি চালানো হয়েছে- এমনই অভিযোগ উঠল ভারতের বেসরকারি বিমান সংস্থা স্পাইসজেটের বিরুদ্ধে।
বেশ কয়েকদিন ধরে চলা এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ সকালে চেন্নাই বিমানবন্দরে বিক্ষোভ দেখান বিমানবালারা। বিমানসংস্থার পক্ষ থেকে গেল সোমবার (২৬ মার্চ) বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসার আশ্বাস দিলে ফের কাজে যোগ দেন তারা। যদিও চেন্নাই বিমানবন্দর থেকে কলম্বোগামী দু’টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট এক ঘণ্টারও বেশি দেরিতে ছাড়ে।
বিমানবালাদের অভিযোগ, গেল কয়েকদিন ধরে ল্যান্ডিংয়ের পরেই তাদের নগ্ন করে তল্লাশি করা হয়। শৌচালয়েও যেতে দেওয়া হয় না। দেহ তল্লাশির পাশাপাশি তাদের ব্যাগ, ব্যক্তিগত সামগ্রী খুলে দেখা হয়। এমনকি তাদের হাতব্যাগ থেকে স্যানিটারি ন্যাপকিন ফেলে দিতেও বলে বিমানসংস্থার নিরাপত্তারক্ষীরা।
তারা আরও জানান, স্পাইসজেট কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, ফ্লাইটের খাবার বিমানবালারা বেআইনিভাবে বিক্রি করেন। সেই টাকা ও বিমানের অন্য মূল্যবান সামগ্রী বিমানবালারা চুরি করেন। সে কারণে উড়ান থেকে নামার পর তাদের শৌচালয়ে পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয় না।
স্পাইসজেটের তরফে জানানো হয়েছে, কাজ থেকে ফেরার সময় কর্মীদের তল্লাশি চালানোর নিয়ম পৃথিবীর সর্বত্র রয়েছে। এক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে। তাও সেই কাজ প্রশিক্ষিত নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে বন্ধ ঘরের মধ্যে করানো হয়। অবশ্যই নারী কর্মীদের নারী নিরাপত্তারক্ষী ও পুরুষ কর্মীদের পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীরাই তল্লাশি করেন।
বিমানসংস্থার তরফে আরও দাবি করা হয়, যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রীকে নিরাপত্তা তল্লাশির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, সেখানে বিমানকর্মীদের কেন তল্লাশি করা হবে না?
এদিন স্পাইসজেট বিমানসংস্থার কর্মীদের তল্লাশির কথা স্বীকার করার পাশাপাশি জানানো হয়েছে, বহু কর্মী উড়োজাহাজ থেকে পাওয়া অর্থ ও অন্য মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করেন। গেল ২৮, ২৯ মার্চ বিভিন্ন বিমানবন্দরে তল্লাশি চালিয়ে এমন অনেক বিমানকর্মীকে হাতেনাতে ধরাও হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
চেন্নাই বিমানবন্দরে বিমানবালাদের বিক্ষোভের ভিডিও প্রকাশ হতেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিওয় দেখা যায়, স্পাইসজেটের ইউনিফর্ম পরা একদল বিমানবালা আন্দোলন করছেন।
অভিযোগ, নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের শরীরে আপত্তিকরভাবে হাত দিয়েছেন। এমনকি তল্লাশির নামে তাদের নগ্নও করা হয়েছে।
এক ঋতুস্রাব হওয়া বিমানবালাকে তার স্যানিটারি ন্যাপকিন খুলতেও বলা হয় বলে অভিযোগ।
বিমানকর্মীদের দাবি, যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুবিধা দিতে তারা সাধ্যমতো চেষ্টা করেন। তার বদলে তাদের নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে বিমানসংস্থা খেলা করছে।
নিরাপত্তার নামে নারীদের শরীরে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করা ও স্যানিটারি ন্যাপকিন খুলতে বাধ্য করা কোন নিয়মের মধ্যে পড়ে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। শ্লীলতাহানি ও ধর্ষণ নিয়ে প্রতিবাদ হয়, কিন্তু এই ঘটনা তার বাইরে নয় বলেও দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনরত বিমানবালারা।
সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, এনডি টিভি • অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর
