মারাই গেল তিন পায়ের বাঘিনীটি

২০১৭ সালে তোলা তিন পায়ের বাঘিনী। আজ সকালে মারা যায়।

মারাই গেল তিন পায়ের বাঘিনীটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর

আফ্রিকান বাঘের হামলায় আহত হওয়া তিন পায়ের বাঘিনীটির মৃত্যু হয়েছে। কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজ রোববার সকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে রয়েল বেঙ্গল টাইগারটি।

সুন্দরবনে চোরা শিকারীদের ফাঁদে পড়েছিল বাঘিনীটি। পরে একটি পা হারায় সে।

সেখান থেকে বন বিভাগের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজারের ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিব সাফারী পার্কে পাঠান। পরে ২০১৩ সালে ২৪ মে তিন পায়ের বাঘিনীর ঠাঁই হয় গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা আরো নয়টি রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সাথে। কিন্তু সুন্দরবনের এ বাঘিনী নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেনি আফ্রিকান বাঘের সাথে। সব সময় একা একাই বসে থাকতো সে।
মাঝে মধ্যে তাঁর গর্জনে আফ্রিকার রয়েল বেঙ্গল টাইগারও চুপসে যেতো। এরই মধ্যে প্রজননে পূর্ণাঙ্গ বয়স অতিক্রম করায় সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রজননের চেষ্টা শুরু করে বাঘিনীটির। গত বুধবার আফ্রিকার পুরুষ বাঘের সাথেই তাকে মিলিত করার উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষ ট্রাঙ্কুলাইজার গানে চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তাকে অচেতন করেন। কিন্তু, তেলে আর জলে যে মেশে না তা তাৎক্ষণিকভাবে প্রমাণ করে আফ্রিকান বাঘগুলো। অচেতন হওয়ার পরই আফ্রিকান কয়েকটি বাঘ এসে আক্রমন করে আহত করে বাঘিনীকে। পরে সেবা ও শুশ্রুয়া দিলেও সে আর সুস্থ হয়ে ওঠেনি। আজ রবিবার সকালে সে মারা যায়।

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোতালেব হোসেন জানান, বাঘিনীকে আমরা বংশবিস্তারের লক্ষ্যে প্রজননের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বার্ধক্যজনিত সমস্যা থাকায় সে গর্ভধারণ করেনি। বাঘের মৃত্যুর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

ময়নাতদন্তকারী দলের সদস্য শ্রীপুর উপজেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল জলিল জানান, প্রাথমিকভাবে বাঘটির মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। তবে বাঘটির গায়ে বিচ্ছিন্ন কিছু আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমরা প্রাথমিক স্যাম্পল সংগ্রহ করে ঢাকার কেন্দ্রীয় পশু রোগ গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষার জন্য প্রেরণ করেছি। রিপোর্টটি হাতে আসলেই মৃত্যু সঠিক কারণ বলা যাবে।

সম্পর্কিত খবর