জাপানে প্রবীণদের পরিচর্যায় রোবট!

প্রবীণদের ব্যায়াম করাচ্ছে রোবট। ছবি: রয়টার্স

জাপানে প্রবীণদের পরিচর্যায় রোবট!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

দীর্ঘায়ুর কারণে জাপানে প্রবীণদের সংখ্যা ও অনুপাত ক্রমেই বাড়ছে৷ সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০৩৫ সালে জাপানের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের বয়স হবে ৬৫ বা তার বেশি৷ কিন্তু, এত প্রবীণের সেবা করার মতো মানুষ তো বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত রাষ্ট্র জাপানে নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রবীণদের পরিচর্যার জন্য রোবটদের কাজে লাগানোর চিন্তা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তা বাস্তবায়নও শুরু করেছে দেশটি। এসব রোবট প্রবীণদের শুধু পরিচর্যাই নয়, তাদের সঙ্গে খেলাধুলা, এমনকি গল্পও করছে।

আসুন জেনে নিই জাপানে কীভাবে প্রবীণদের পরিচর্যায় কাজে লাগানো হচ্ছে রোবটকে।

টোকিওর একটি প্রবীণাবাসে বাসিন্দাদের ব্যায়াম করানোর দায়িত্ব ‘পেপ্পার’ বা ‘মরিচ’ নামের একটি রোবটের৷ ‘মরিচ’-এর গলাটা ইলেকট্রনিক যন্ত্রের মতো খ্যানখ্যানে হলেও, সে কিন্তু খুবই অমায়িক এবং অত্যন্ত ভদ্রভাবে ‘‘এবার ডান দিকে, এবার বাঁ দিকে, বাঃ, খুব ভালো হয়েছে’’ ইত্যাদি নির্দেশ দেয়৷ জাপানের মোট ৫০০ প্রবীণাবাসে ‘মরিচ’-এর দেখা পাওয়া যাবে৷ সে নাকি হালকা গোছের কিছু আলাপচারিতাও করতে পারে৷

news24bd.tv

রোবট পোষ্যর সঙ্গে খেলছেন একব প্রবীণা। ছবি: রয়টার্স

শিন-তোমি প্রবীণাবাসে পোষ্য প্রাণী বলতেও রোবট। বিভিন্ন নামের যান্ত্রিক কুকুর, বিড়াল।

তেমনই একটি কুকুরের নাম 'আইবো'। এখানে নাকি এ ধরনের ২০টি বিভিন্ন মডেল আছে – বাসিন্দারা তাদের যাকে ইচ্ছে নিয়ে খেলতে পারেন৷ ওদিকে জাপান সরকারের আশা যে, বিদেশেও ‘আইবো’-র মতো রোবট কুকুরের চল হবে৷

‘পারো’ একটি যান্ত্রিক সিলের নাম। এই রোবটের গায়ে হাত বোলালে সে ভারী মিষ্টি সব আওয়াজ করে৷ ‘পারো’-কে তৈরি করতে দশ বছরের গবেষণা লেগেছে৷ এখন নাকি সারা বিশ্বে পাঁচ হাজার যান্ত্রিক সিল আছে, তার মধ্যে তিন হাজারই জাপানে৷ তবে এসব রোবট পশু-পাখি কিনতে গেলে খরচ করতে হবে কাড়ি কাড়ি টাকা। ‘পারো’র দাম জাপানে ৩,৮০০ ডলার, ইউরোপে ৫,০০০ ইউরো৷ সরকার ভর্তুকি দেওয়ার কারণেই জাপানের প্রবীণাবাসগুলো এসব বহুমূল্য ‘খেলনা’ কিনতে পারে।

জাপানে যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে প্রবীণ-প্রবীণারা হাঁটতে শেখেন। কীভাবে ভারসাম্য রাখতে হবে, কোথায় পা ফেলতে হবে, সব কিছু দেখিয়ে দেয় রোবট৷ এসব সত্ত্বেও রোবট কোনোদিনই মানুষের জায়গা নিতে পারবে না বলে জাপান সরকারের বিশ্বাস৷ তবে রোবটরা প্রবীণ-প্রবীণাদের মনোরঞ্জন ও পরিচারকদের কর্মভার লঘু করার কাজে সাহায্য করতে পারবে৷

সম্পর্কিত খবর