বিমান দুর্ঘটনা: কীভাবে বদলে গেল ফয়সাল ও নাজিয়ার মরদেহ?

নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হন ২৬ জন বাংলাদেশি।

বিমান দুর্ঘটনা: কীভাবে বদলে গেল ফয়সাল ও নাজিয়ার মরদেহ?

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

নেপালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে নিহতদের মধ্যে ফয়সাল ও নাজিয়ার মৃতদেহ কবর থেকে তোলা হচ্ছে। মরদেহ অদল-বদল হয়ে যাওয়ায় আদালতে একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে এ দুইজনের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে তাঁদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে এ ব্যাপারে যতদ্রুত সম্ভব ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

যাদের মৃতদেহ বদলে গেছে তাদের একজন বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক আহমেদ ফয়সাল।

আরেকজন হলেন নাজিয়া আফরিন চৌধুরী।

১২ মার্চ নেপালে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হন ২৬ জন বাংলাদেশি। এর কয়েকদিন পর নেপালে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তাঁদের মরদেহ বাংলাদেশে আনা হলে আহমেদ ফয়সালের মরদেহ গ্রহণ করেন তাঁর মামা কায়কোবাদ। কিন্তু, দাফন করতে গিয়ে অবাক হন পরিবারের সদস্যরা।

তারা নিশ্চিত হন এ মরদেহ ফয়সালের নয়। এরপর আদালতের দ্বারস্থ হন তারা।

কীভাবে অদল-বদল হল মৃতদেহ?
গত ১২ই মার্চ নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে ছিলেন সাংবাদিক আহমেদ ফয়সাল। নেপাল থেকে তার মরদেহ দেশে আসার পর ঢাকায় আর্মি স্টেডিয়ামে পরিবারের কাছে তা হস্তান্তর করা হয়। সেদিনই মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাদের গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের ডামুড্যায়। পরদিন ২০শে মার্চ সকালে মৃতদেহ কবর দেওয়ার সমস্ত আয়োজন চূড়ান্ত। কফিন থেকে তার শরীর কবরে নামানোর শেষ মুহূর্তে দেখা গেল সাদা কাপড়ে মোড়ানো মরদেহের ওপরে স্টিকারে লেখা "নাজিয়া আফরিন চৌধুরী" নামটি। তারা বুঝতে পারেন যে এটা আহমেদ ফয়সালের লাশ নয়। কিন্তু হাজার হাজার মানুষের সামনে অনাকাঙ্ক্ষিত, বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কায় সেই মুহূর্তে মৃতদেহ দাফন করা হয়। তবে ফয়সালের পরিবারের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল আরও একটি বিষয়ে। কারণ আহমেদ ফয়সাল লম্বা আকৃতির ছিলেন কিন্তু কফিনের ভেতর যে মৃতদেহ ছিল তা দেখে তেমনটা মনে হয়নি।

এসব কথা জানিয়েছেন নিহত আহমেদ ফয়সালের পরিবারের পক্ষে থাকা আইনজীবী আশরাফ উল আলম।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে ফয়সালের পরিবারের সদস্যরা নাজিয়া আফরিনের পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করেন। আহমেদ ফয়সালের বাড়ি শরিয়তপুরের ডামুড্যা গ্রামে। নাজিয়া আফরিন চৌধুরীর বাসা ঢাকায় সূত্রাপুরের টিপু সুলতান রোডে। তাকে দাফন করা হয়েছিল বনানী কবরস্থানে। ফয়সালের পরিবার যোগাযোগ করার আগ পর্যন্ত নাজিয়া আফরিনের পরিবার বিষয়টি জানতো না। তবে যেহেতু ফয়সালের কফিনে নাজিয়ার নাম লেখা স্টিকার পাওয়া গেছে তাই তারাও বিষয়টিতে একমত হন এবং দুই পরিবার আদালতে আবেদন করেন।

আশরাফ উল আলম জানান, আহমেদ ফয়সালের কফিনে পাওয়া নাজিয়া আফরিন চৌধুরী লেখা স্টিকারও আদালতে দেখানো হয়।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দুজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং পরস্পরের কাছে হস্তান্তর ও যার যার কবরে নতুন করে কবর দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে কোনও সময়সীমা দেওয়া হয়নি।

সম্পর্কিত খবর