শিক্ষিকাকে ধর্ষণ চেষ্টা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আল্টিমেটাম

শিক্ষিকাকে ধর্ষণ চেষ্টা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আল্টিমেটাম

জুন্নু রায়হান • ভোলা প্রতিনিধি

ভোলার মনপুরা উপজেলায় স্কুল শিক্ষিকাকে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার ও বিচারের  দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষক সমাজ।  

আজ বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। তার বিরুদ্ধে মনপুরা থানায় শিশু ও নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা এনাম হাওলাদার এই মুহূর্তে পলাতক রয়েছে।

এরই মধ্যে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।

অভিযোগকারীর নাম শিউলী রানী দাস। তিনি মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া এলাকার হারিচ রোকেয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা।  

শিউলী রানীর অভিযোগ, গত শনিবার (৩১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টায় তিনি স্কুলে আসেন।

তখনও অন্যান্য সহকর্মীরা কেউ আসেন নি। শিউলী তখন স্কুলের দোতলার লাইব্রেরি রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। পাশের ক্লাস রুমে দুই তিন জন ছাত্রী এসেছে মাত্র।  

এরই মধ্যে স্কুলের ছাদের চিলে কোঠায় অবস্থানকারী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি এনাম হাওলাদার ভবনের নিচের কলাপসিবল গেইটে তালা লাগিয়ে লাইব্রেরি রুমে প্রবেশ করে।  প্রথমে কিছুই টের পাননি শিউলী। এক পর্যায়ে রুমের দরজা বন্ধ করে শিক্ষিকার ওপর চড়াও হয় এনাম হাওলাদার। তাকে টেনে-হিঁচড়ে চিলে কোঠার দিকে নেয়ার চেষ্টা করে। না পেরে শিক্ষিকাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণের চেষ্টা করে।  

‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার দিলে স্থানীয় এক বৃদ্ধ এগিয়ে আসেন। এরই মধ্যে শিউলী রানী দৌঁড়ে নিচে নেমে এসে দেখেন গেইটে তালা ঝুলছে। পরে এনাম ওপর থেকে চাবি ফেলে দিলে শিক্ষিকা তালা গেইট খুলে বাইরে বেরিয়ে আসেন।  

মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, ঘটনার ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পারেনি প্রশাসন। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রশাসন এনাম হাওলাদারকে আটক করতে না পারলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে মনপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন খান জানান, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে প্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছে না। আশা করি তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, ছাত্রলীগ নেতা এনাম হাওলাদারের বাড়ি মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া সিরাজগঞ্জ বাজার এলাকায়। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে গত ২ বছর যাবত ওই স্কুলের ছাদের চিলেকোঠা দখল করে বসবাস করতো এনাম। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তাকে বিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ার জন্য বললেও সে রয়ে যায়। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক এলাকার চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জানালে উল্টো তার ওপর চাপ আসতো। ফলে স্কুলের চাবি শিক্ষকরা তার কাছে দিতে বাধ্য হয়। তা না হলে স্কুলে ভাঙচুর চালাতো সে। ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় এনাম পারিয়ে যাওয়ায় গত পরশু স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই রুমটি উদ্ধার করে।  

জুন্নু/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর