পাহাড়ে শুরু হলো বৈসাবি মেলা

পাহাড়ে শুরু হলো বৈসাবি মেলা

ফাতেমা জান্নাত মুমু  • রাঙামাটি

রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে ১০ ভাষাভাষি ও ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি। আর এ উৎসবকে ঘিরে বসানো হয়েছে- বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি মেলা।  

ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব উপলক্ষে পাহাড়ের সর্বত্র এখন সাজ সাজ রব। রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে বসেছে হরেক রকম বাহারি পণ্যের স্টল।

সবগুলো স্টল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মাচাঙ ঘরের আদলে বাঁশ আর কাঠ দিয়ে তৈরি। আর এসব স্টলে স্থান পেয়েছে- চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, চাক, পাংখোয়া, লুসাই, খুমী ও খিয়াং নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি, সংষ্কৃতি, খাবার, নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী। এ মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করতে যোগ দিয়েছে অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও এর পাশ্ববর্তী ভারতের মিজোরাম রাজ্যের শিল্পীরা।

news24bd.tv

বৃহষ্পতিবার বিকের সাড়ে ৪টায় বৈসাবি মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার।

এ সময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙামাটি সেনা সদর জোনের কমান্ডার লে. কর্ণেল রেদুওয়ান  ইসলাম, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মো. মুছা মাতব্বর উপস্থিত ছিলেন।

মেলা উদ্বোধনের পর মেলা প্রাঙ্গন মাতিয়ে তুলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রাদয়ের তরুণ-তরুণীরা। তাদের পায়ের নুপুরের ছন্দ আর বাঁশির সুরে ছুটে আসে হাজার হাজার দর্শক। মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে যায় মেলা প্রাঙ্গন। মেলাকে ঘিরে পাহাড়ি-বাঙালিসহ ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সকলের অংশগ্রহণে সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্র পরিণত হয়। তাছাড়া মেলা চলাকালীন স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে বৈসাবি মেলা উপলক্ষে রাঙামাটি সরকারি কলেজের চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে মেলা স্থলে মিলিত হয়। সেখানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীর তাদের ঐতিহ্যবাহী সাজে অংশগ্রহণ করেন।
news24bd.tv

পুরোন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করতে মূলত আয়োজন করা হয় বিজু -সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু মেলা, যেটা চলবে ৩ দিন ধরে। মেলা উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল নিজ নিজ ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করবে।  

এছাড়া শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতা, চাকমা নাটক, পাচন রান্না প্রতিযোগিতাসহ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান, পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর জীবনধারার ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী এবং সবশেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।  প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেরা প্রাঙ্গণ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।  

মুমু/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর