মৃত মাকে ৩ বছর ফ্রিজে রেখেছিল ছেলে! (ভিডিও)

ছেলে শুভব্রত মজুমদার

মৃত মাকে ৩ বছর ফ্রিজে রেখেছিল ছেলে! (ভিডিও)

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেহালার এক বাড়ি থেকে বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কলকাতার সংবাদমাধ্যম জানায়, বেহালার ঘোলসাপুরের শুভব্রত মজুমদার নামের এক ব্যক্তি গত ৩ বছর ধরে নিজের মায়ের মরদেহ বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এই ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা যায়, শুভব্রত মজুমদারের মা গত ৩ বছর আগে মারা যান।

এরপর প্রতিবেশীরা বৃদ্ধার খোঁজ নিতে চাইলে ছেলে বলতেন, মায়ের দেহ ‌‘পিস হ্যাভেন'-এ রাখা হয়েছে। কিন্তু পিস হ্যাভেন কোথায় সে ব্যাপারে প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর দিতেন না শুভব্রত।
news24bd.tv
এই ফ্রিজের ভেতরই মমি করে রাখা হয়েছিল বীণা মজুমদারের মরদেহ

ফলে বৃদ্ধার মৃত্যু নিয়ে প্রতিবেশীদের মনে সন্দেহ ক্রমেই বাড়তে থাকে। এক সময় তারাই পুলিশকে খবর দেয়।



এরপর পুলিশ তদন্তে এলে অপ্রিয় সত্যিটা বেড়িয়ে আসে। বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ আবিষ্কার করে পিস হ্যাভেন নয়, গত তিন বছর ধরে মায়ের মরদেহ ফ্রিজে মমি করে রেখে দিয়েছিলেন ছেলে।  

শুধু ফ্রিজে ভরেই রাখেননি শুভব্রত, মমি করে রাখার জন্য মৃতা মায়ের শরীরে মাখানো হয়েছে ফর্ম্যালডিহাইড। সংরক্ষণের জন্য পেট কেটে বের করা হয়েছে নাড়িভুঁড়িও।

কয়েক বছর আগে কলকাতার রবিনসন স্ট্রিটেও প্রায় একই ধরনের অপরাধের প্রমাণ পায় পুলিশ। সেবার বোন দেবজানির কঙ্কালসহ ভাই পার্থকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। জানা যায়, বোনের মৃত্যুর পর কাউকে কিছু না জানিয়ে ভাই পার্থ সেই মরদেহ বাড়িতেই রেখে দিয়েছিলেন।

সংবাদমাধ্যম জানায়, শুভব্রতকে একটা সময় এলাকাবাসী মেধাবী ছাত্র হিসেবেই জানতো। লেদার টেকনোলজির ছাত্র শুভব্রত পাস করার পর বানতলার চর্মনগরীর একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু সেই কাজ সদিচ্ছায় ছেড়ে দিয়ে বেকার জীবন-যাপন শুরু করেন তিনি। এরপর থেকে মা বীণা মজুমদার ও বাবা গোপাল মজুমদারের সঙ্গেই থাকতেন ভবঘুরে স্বভাবের শুভব্রত।

প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে হাসপাতালে বীণা মজুমদারের মৃত্যু হয়। সৎকারের কোনো সংবাদ না জানায় এই বিষয়ে প্রতিবেশীরা প্রশ্ন করলে শুভব্রত বলতেন, মায়ের দেহ পিস হ্যাভেনে রাখা আছে। কিন্তু পড়শিদের সন্দেহ তাতে কাটেনি।

গত ৪ এপ্রিল রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুভব্রতের বাড়িতে অভিযান চালায় বেহালা থানা পুলিশ। তখনই পুলিশের নজরে আসে, বিশাল এক ডিপ ফ্রিজে বীণার মরদেহ মমি করে রাখা হয়েছে।

বাড়িতে অবশ্য শুভব্রত’র বাবা গোপাল মজুমদারও থাকতেন। কিন্তু ৮৯ বছরের বৃদ্ধ এ বিষয়ে কিছু জানতেন কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

তবে প্রতিবেশীদের অভিযোগ, গোপাল মজুমদার সবই জানতেন। স্বর্গীয় বীণা সরকারি চাকরি করতেন বলে তার পেনশনও ছিল। সেই পেনশনের লোভেই সম্ভবত গোপাল মজুমদার সব জেনেও কোনো প্রতিবাদ করেননি। এমনটাই বলছেন প্রতিবেশীরা।  

গোপাল মজুমদারকে গ্রেপ্তার না করলেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা     •      অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর