গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন, স্বামী ও ভাসুর আটক

গৃহবধূ আনোয়ারা খাতুনকে এভাবেই গাছের সাথে বেঁধে রাখে পাষণ্ড স্বামী ও ভাসুর [ছবি: নিউজ টোয়েন্টিফোর]

গৃহবধূকে গাছের সাথে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন, স্বামী ও ভাসুর আটক

শাকিলা ইসলাম জুঁই • সাতক্ষীরা প্রতিনিধি 

সাতক্ষীরায় এক গৃহবধুকে গাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। আজ (৬ এপ্রিল) সকালে সদর উপজেলার দহাকুলা গ্রামে ওই গৃহবধূর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়।  

ঘটনার পরপরই স্বামী কাবিল  ও ভাসুর হাবিলকে আটক করেছে পুলিশ। আহত গৃহবধূ আনোয়ারা খাতুনকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শরিফুল ইসলাম জানান, যৌতুকের দাবিসহ নানা কারণে স্বামী কাবিল তার স্ত্রী আনোয়ারাকে প্রায়ই মারধর করতো। আজ সকালে ভাত খাওয়া নিয়ে আবারও তার মধ্যে ঝগড়া হয়।  

news24bd.tv
হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আনোয়ারা খাতুন [ছবি: নিউজ টোয়েন্টিফোর]

এ সময় স্বামী ও ভাসুর তাকে বকাবকি করে। গৃহবধু আনোয়ারা এর প্রতিবাদে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেয়।

পরে স্বামী কাবিল ও তার ভাই হাবিল আনোয়ারাকে বাড়ির উঠোনে একটি আম গাছে বেঁধে লাঠি ও ঝাঁটা দিয়ে নির্দয়ভাবে মারধর করে।  

আনোয়ারার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে দুই ভাই কাবিল ও হাবিলের হুমকির মুখে উদ্ধার করতে সাহস পায়নি। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে পুলিশ গৃহবধুকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে। ঘটনাস্থল থেকে কাবিল ও তার ভাই হাবিলকে আটকও করে পুলিশ।  

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে কামরুল ইসলাম আনোয়ারার বাঁধন খুলে তাকে মুক্ত করেন। এরপরই তাকে চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।  

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিত গৃহবধু আনোয়ারা খাতুন সাংবাদিকদের জানান, ভাসুর হাবিলের দেওয়া কুপ্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তার ষড়যন্ত্রে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এ ছাড়া যৌতুকের দাবিতে তার স্বামীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও অধিকাংশ সময় নির্যাতন করতো। সকালে স্বামীর সাথে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয়ে তর্ক হলে তার স্বামী ও ভাসুর বাড়ির উঠোনে গাছে বেঁধে মারধোর করে।  

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আক্তারুজ্জামান জানান, গৃহবধুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাঠি ও ঝাঁটার কাঠির আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। তিনি দ্রুত সুস্থ্য হয়ে উঠবেন।  

গৃহবধূর মা রহিমা খাতুন জানান, আমি এ ঘটনার বিচার চাই। যাতে আর কোনো নারীকে তার স্বামীর দ্বারা নির্যাতিত হতে না হয়।  

শাকিলা/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর
 

সম্পর্কিত খবর