সংসদে আন্দোলনকারীদের নিয়ে যা বলেছিলেন মতিয়া চৌধুরী (ভিডিও)

সংসদে আন্দোলনকারীদের নিয়ে যা বলেছিলেন মতিয়া চৌধুরী (ভিডিও)

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

সরকারি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। হামলা হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে। কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে এমন আন্দোলন, ঢাবি উপাচার্যের বাড়িতে হামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

গতকাল (৯ এপ্রিল) সংসদ অধিবেশনে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেওয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধ চলছে, চলবে। রাজাকারের বাচ্চাদের আমরা দেখে নেবো। ’ আর এতেই ফের ক্ষোভে ফুসে উঠেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একাংশ।

কৃষিমন্ত্রী সংসদে বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গায়ে হাত দেওয়া, রাতের আঁধারে তার বাড়িতে হামলা, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা শিক্ষার্থী, সত্যিকার অর্থে যারা জ্ঞান চর্চা করতে এসেছেন, সবার জন্য একটা কলঙ্কজনক অধ্যায়।

এমন ঘটনায় ওই বাড়ির মেয়েরা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে। রাতের আঁধারে যে কোন একটা দুর্ঘটনা একটা নারীর জীবন শেষ করে দিতে পারে। প্রতিবাদ যদি করতে হয়, মুখোশ পরতে হবে কেন? মুখোশ কারা পরে? ভণ্ড যারা তারা পরে। প্রতারক যারা তারা পরে। সাহস থাকলে মুখটা দেখাও। লজ্জ্বা করে না? ইতর হওয়ার একটা সীমা আছে।

কাপুরুষ! মুখ দেখানোর সাহস রাখে না। তারা আজ উপাচার্যের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এমনকি নারীর সঙ্গে সৌজন্যতা রাখার প্রয়োজন বোধ করেনি।  

মতিয়া বলেন, কোটা নিয়ে একটা কথা পরিস্কার বলতে চাই। আমরা মফস্বল এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। ঢাকায় ছেলে-মেয়েরা একটু অভিজাত স্কুলে পড়াশুনা করে। আর শেখ হাসিনার বিনা পয়সার বই পাওয়ার সুবাদে যে মেয়েটি বা ছেলেটি উচ্চশিক্ষার প্রবেশদারে আজ আসতে পেরেছে, তার মেধা আর ঢাকার স্কুল-কলেজে পড়াশুনা করা শিক্ষার্থীর মেধা এক না। সবাইকে সমান সুযোগ দিয়ে তারপরে মেধার বিচার করেন। আমার এলাকায় আদিবাসী আছে। আসল গাত্রদাহ মুক্তিযোদ্ধার কোটা নিয়ে। যখন আমরা '৯৬ তে সরকার গঠন করলাম। ষড়যন্ত্রের কারণে ২০০১ সালে আমরা আসতে পারলাম না। ২০০৯- আবার সরকার গঠন করলাম। কিন্তু তখন তো মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের সরকারির চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে। পৃথিবীর দেশে দেশে মুক্তিযুদ্ধ, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য যারা জীবন বাজি রাখে তাদের জন্য সুযোগ আছে। এটা নতুন কিছু না। যারা জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেছে তাদের সন্তানরা সুযোগ পাবে না! ওই রাজাকারের বাচ্চারা সুযোগ পাবে! তাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংকুচিত করতে হবে? পরিস্কারভাবে বলতে চাই- মুক্তিযুদ্ধ করেছি, মুক্তিযুদ্ধ চলছে, চলবে এবং এই রাজাকারের বাচ্চাদের অবশ্যই আমরা দেখে নেবো।

এদিকে কৃষিমন্ত্রীর এই বক্তব্যে ফের ফুঁসে উঠেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সোমবার সরকারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দিলেও আজ সকাল থেকে ফের রাজপথে নেমে এসেছে আন্দোলনকারীদের একাংশ। সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেলে তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষণা দিয়েছেন।


কৃষিমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য শুনতে ক্লিক করুন 

 অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর