ঢাবির হলে কোটা আন্দোলনকারীদের মারধর

সংগৃহীত ছবি

ঢাবির হলে কোটা আন্দোলনকারীদের মারধর

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হলের ছাত্রীদের মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাত ১১টায় সুফিয়া কামাল হল শাখার সভাপতি ইফফাত জাহান এশার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের মারধর করে বলে জানা গেছে। হলের মেয়েদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগও পাওয়া গেছে।  

মারধরের ভিডিও এবং আহত শিক্ষার্থীদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশার ৩০৭ নম্বর রুমে মারধর করা হয়েছে। হলের এক শিক্ষার্থীর মাথায় সেলাই দেওয়া হয়েছে সেলাই। আহত দুই ছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা জানান, মেয়েটার চিৎকারে হলের সব ছাত্রীরা ওই রুমে যায়।

এরপর ভিক্টিমকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় এশা হল থেকে পালিয়ে যায়। পরে তাকে হলের বাইরে আটক করে অন্য ছাত্রীরা দুইবার মারধর করে।  এক পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জুতোর মালা পরিয়ে শাস্তি দেয় এশাকে।

শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কার নিয়ে পোস্ট দেওয়া, ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে না যাওয়া ও নেতাদের কথা না শোনায় বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্যার এ এফ রহমান হল, হাজী মুহাম্মাদ মহসিন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, জহুরুল হক হল, এসএম হল, ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি ও হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত ছাত্রীদের মধ্যে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মোরশেদা খানমের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। আহত অন্য ছাত্রীদের মধ্যে আছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শারমীন সুলতানা কনা, গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের আফিফা আকতার রিমু ও ভূতত্ত্ব বিভাগের রিতু আক্তার।

এদিকে, মারধরের অভিযোগে সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান ইশাকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্রলীগ থেকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান আনুষ্ঠানিকভাবে বহিষ্কার করা ও তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন।

এদিকে রাতে ঢাবি ইংরেজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক নীলিমা আকতার ফেসবুকে একটি পোস্টে লেখেন, ''সুফিয়া কামাল হলের যে মেয়েটির ছবি ভাইরাল হয়েছে, ওর রগ কাটেনি। ও সেই সময় অত্যাচারিত অন্য একটি মেয়ের চিৎকার শুনে প্রতিবাদে ছাত্রলীগের নেত্রীর রুমের গ্লাসে লাথি মেরেছিল। যে শিক্ষক তাকে পাশের হাসপাতালে নিয়েছেন, তাঁর কাছে ওই ছাত্রীই এটা বলেছে। সেই শিক্ষকের সাথে আমার কথা হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতেও পাবেন এ তথ্য। তবে, ওখানে সাধারণ ছাত্রীরা বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়েছিল। আক্রমণের স্বীকার হয়েছে। সাধারণ ছাত্রীরা ভীষণ ভয় পেয়েছে। জানলাম দোষী ছাত্রলীগ নেত্রী এশাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করেছেন উপাচার্য।

আহত ছাত্রীকে হলের পাশের সরকারী কর্মচারী হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। পরে মগবাজারে তার লোকাল গার্ডিয়ানের বাসায় গেছে বলে জেনেছি।

ছাত্রদের ন্যায্য দাবির সাথে আমরা আছি। হলে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে আমি নিজেই খুব শংকিত। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চাই। সবারই সংযত হওয়া দরকার। ''

সম্পর্কিত খবর