সিরিয়া ইস্যুতে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি

প্রতীকী ছবি

সিরিয়া ইস্যুতে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলা নিয়ে মুখোমুখি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। একে অন্যের দিকে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগের তীর ছুড়ছে।  

সিরিয়ায় রাসায়ানিক হামলা চালিয়ে বেসামরিক মানুষ হত্যার পেছনে বিদেশি এজেন্টরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লেভরভ।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স বলছে তারাও সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার প্রমাণ পেয়েছে।

তবে তাদের অভিযোগের তীর রাশিয়ার দিকে। বিদ্রোহী দমনে রাশিয়ার সহায়তায় সিরিয়া সরকার এ হামলা চালিয়েছে বলে মনে করছে তারা। এ কারণে যুক্তরাজ্যের পাশাপাশি এই দেশ দুটি সিরিয়ায় সামরিক হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার কথা ভাবছে।

তবে, সিরিয়ার মিত্র রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেছে, এ ধরণের হামলা হবে নতুন যুদ্ধের সামিল।

খবর বিবিসির।

সিরিয়ার পূর্ব গৌতা এলাকায় রাসায়নিক অস্ত্র হামলার বিষয়ে সত্যতা খুঁজতে স্বাধীন একদল পর্যবেক্ষক সেদিকে রওনা হয়েছেন। তারা আগামীকাল শনিবার সেখানে পৌঁছবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

আজ শুক্রবার এক প্রেস বিফিং এ লেভরভ বলেন, 'একের পর এক প্রমাণিত' এ  হামলাটি ছিল একটি দেশের নেতৃত্বে 'রাসোফোবিক (রাশিয়া বিরোধী) অভিযানের অংশ' । যদিও তিনি দেশটির নাম উল্লেখ করেননি।  

হোয়াইট হাউজ বলছে, এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য মূল্যায়ন অব্যাহত রেখেছে তারা এবং এর প্রতিক্রিয়া জানাতে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকারী সংগঠন (ওপিসিডব্লিউ) এর প্রতিনিধিরা আগামীকাল এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করবেন। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ সংক্রান্ত তথ্য পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

গত শনিবার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা পূর্ব গৌতার দোয়েমা শহরে সন্দেহজনক রাসায়নিক হামলায় ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় কর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা। এর প্রতিবাদে সেখান কর্মবিরতির আহ্বান জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ রাশিয়ার সহায়তায় নিরীহ মানুষের ওপর রাসায়ানিক হামলা চালিয়েছে সিরিয়া। হামলার পর গত রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, সিরিয়ায় এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের দায়ভার পুতিনকেই বহন করতে হবে। কারণ, রাশিয়ার সহায়তায় বিদ্রোহী দমনের নামে সিরিয়া সরকার এ হামলা চালিয়েছে।

তবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ রাসায়নিক হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি এ ধরণের খবর মনগড়া বলে মন্তব্য করেন।

এদিকে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পূর্ব গৌতা এলাকায় সতেরো'শ বেসামরিক নাগরিক হত্যার ছয় সপ্তাহের মাথায় আসাদ সরকার ওই অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে দাবি করছে। যদিও সেটি রাজধানী দামাস্কাসের বাইরে অবস্থিত।

তবে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক  সিরিয়ান হিউম্যান রাইট অভজারভেটরি মনিটরিং সংস্থা বলছে আজ শুক্রবার পর্যন্ত এখনো সেখানে প্রায় চার হাজার ইসলামিক যৌদ্ধা ও বেসামরিক নাগরিক অবস্থান করছেন।

সিরিয়াতে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন রেকর্ড করে ভায়োলেশন ডকুমেন্টেশন সেন্টার (ভিডিসি) বলছে, সেখানে যেসব মৃতদেহ পাওয়া গেছে সেগুলোর মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল, চামড়া বিকৃত হয়ে গেছে, অনেক মৃতদেহের চোখ পুড়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, আহতদের রক্ত ও প্রস্রাবের নমুণা পরীক্ষা করে ক্লোরিন এবং নার্ভ এজেন্ট হামলার বিষয়ে ইতিবাচক
প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী দূত নিক্কি হ্যালি বলেছেন, 'আমরা সুনির্দিষ্টভাবে হামলার বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ হাতে পেয়েছি। এখন এ বিষয়ে আমাদের পরবর্তী করণীয় নিয়ে ভাবছি'।

সম্পর্কিত খবর