পুলিৎজার পুরস্কার জয়ীদের দলে প্রথম বাংলাদেশি

সাংবাদিক মোহাম্মদ পনির হোসেন [ছবি: ফেসবুক]

পুলিৎজার পুরস্কার জয়ীদের দলে প্রথম বাংলাদেশি

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

* প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ‘সাংবাদিকতার অস্কার’খ্যাত পুলিৎজার পুরস্কার জিতেছেন মোহাম্মদ পনির হোসেন।  

* তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের আলোকচিত্র সাংবাদিক।


====================

৪০ দিন বয়সী মৃত সন্তানের অসাড় দেহটি বুকে জড়িয়ে ধরে আছেন এক নারী। বারবার তার মুখে চুমু খাচ্ছেন আর বিলাপ করে কাঁদছেন।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে প্রাণভয়ে নৌকায় করে পালিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে নৌকাডুবিতে সন্তানের মৃত্যু হয়।

হৃদয়বিদারক মুহূর্তটির ছবি তুলছিলেন মোহাম্মদ পনির হোসেন। তিনি তার অভিজ্ঞতার বর্ণনা করছিলেন। বলছিলেন, ‘ওইদিন আরেক ফটো সাংবাদিককে সাথে নিয়ে শাহপরীর দ্বীপে ছবি তুলতে গিয়েছিলেন।

তাদের সিএনজি চালক খবর দিলো একটা নৌকাডুবি হয়েছে। কয়েক কিলোমিটার হেঁটে সেখানে পৌঁছান। ’

পনির হোসেন বলেন, ‘ছবিগুলো যখন তুলি তখন আমি আমার আবেগ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলাম। কিন্তু হোটেলে ফিরে এডিট করতে গিয়ে ল্যাপটপে যখন ছবিগুলোকে দেখলাম তখন আর আমার পক্ষে আবেগ ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। আমি চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। ’

‘মানুষের কষ্ট কতোরকম হতে পারে, এটা রোহিঙ্গা ইস্যু যদি কাভার না করতাম তাহলে সম্ভবত আমি বিষয়টা বুঝতাম না। রোদে পুড়ে, পানিতে ভিজে লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছে এসেছেন তারা। ’

এই ছবিটি সহ আরো দুটি ছবির জন্য পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

অন্য দুটির একটিতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের আগস্টের শেষের দিকে সীমান্তের কাছে বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় একদল রোহিঙ্গা তুমুল বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি তাদের সেখানে আটকে রেখেছে।

অন্য ছবিটিতে রয়েছে ভেলায় চড়ে নদীপথে বাংলাদেশের আসা একদল রোহিঙ্গা।

রোহিঙ্গাদের এমন চরম দুর্ভোগ আর হৃদয়বিদারক কিছু ছবি তোলার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এবারের পুলিৎজার পুরস্কারটি পেয়েছে।

পুলিৎজারকে সাংবাদিকতার অস্কার বলা হয়। রয়টার্সের মোট সাতজন আলোকচিত্র সাংবাদিক রোহিঙ্গাদের নানা মুহূর্তের ছবির জন্য দলগতভাবে এই পুরস্কার পান। এর মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের মোহাম্মদ পনির হোসেন।

এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি হিসেবে তিনি সাংবাদিকদের জন্য বিশ্বের সবচাইতে সম্মানজনক পুলিৎজার পুরস্কার পেলেন।

২০১০ সাল থেকে পনির হোসেন ছবি তুলতেন সখের বসে। সেই শখই একদিন তার পেশা হয়ে দাঁড়ালো। শুরুতে তিনি ফ্রিল্যান্সার হিসেব কাজ করতেন। ২০১৫ সালে তিনি রয়টার্সে যোগদান করেন।

সূত্র: বিবিসি     •      অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর