তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সম্পাদকরা
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

তিন মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে সম্পাদকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় পত্রিকাগুলোর সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ।

আজ সকাল সাড়ে ১১টায় সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, ডাক টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার এবং আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক উপস্থিত ছিলেন।

সম্পাদকদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, কালের কণ্ঠের ইমদাদুল হক মিলন, নিউজ টুডের রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, নিউ এজের নূরুল কবির, প্রথম আলোর মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের মাহফুজ আনাম, ইনকিলাবের এ এফ এম বাহাউদ্দিন এবং ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের এ এইচ এম মোয়াজ্জেম হোসেন।

এছাড়াও যুগান্তরের সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল আলম, সংবাদের খন্দকার মনিরুজ্জামান, বণিক বার্তার দেওয়ান হানিফ মাহমুদ এবং নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।

গেল ২৯ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা প্রস্তাবিত আইনটিতে নীতিগত অনুমোদন দেয়। এই আইনটি পাস হলে বহুল আলোচিত তথ্য প্রযুক্তি আইনটির পাশাপাশি এর সমালোচিত ৫৭ ধারাও বিলোপ হবে।

৫৭ ধারা অনেক বেশি ব্যাপক এবং বিস্তৃত বলে অনলাইনে যে কোনো সমালোচনামূলক লেখনির বিরুদ্ধেই এই ধারা ব্যবহারের সুযোগ আছে বলে সমালোচনা আছে।

প্রস্তাবিত আইনে ৫৭ ধারাকে আরও সুনির্দিষ্ট করে বিভিন্ন ধারায় সংযোগ করা হয়েছে।

তবে প্রস্তাবিত আইনের বিশেষ করে ৩২ ধারা নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই ধারাটির কারণে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে সমালোচনা করে আসছেন সাংবাদিকরা।

এই ধারায় বলা আছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোন সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিধিবদ্ধ সংস্থার কোন গোপনীয় বা অতি গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস বা কম্পিউটার নেটওয়ারর্কে ধারণ, প্রেরণ, সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন তাহলে সেটা হবে গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ। ’

এই ‘গুপ্তচরবৃত্তির’ সর্বোচ্চ শাস্তি ১৪ বছর জেল বা সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা জরিমানা। কেউ যদি এই অপরাধ দ্বিতীয়বার বা বারবার করেন, তাহলে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড ভোগ করতে হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য নানা সময় এই ধারার কারণে সাংবাদিকরা স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হবেন না বলে আশ্বাস দেয়া হচ্ছে।

আইনমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, প্রস্তাবিত আইনটি চূড়ান্ত নয়। এখানে সাংবাদিকদেরকে বিশেষ নিরাপত্তা দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তারা।

গের ৬ ফেব্রুয়ারি আদালত বিষয়ে সংবাদ সংগ্রহকারী সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ল রিপোর্টার ফোরাম’ এর সঙ্গে এর আলোচনায় আইনমন্ত্রী নিশ্চয়তা দেন, ৩২ ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধা হবে না। এই ধারায় কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলে বিনা পয়সায় মামলা লড়ার ঘোষণাও দেন তিনি।

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর