রোহিঙ্গা শিবিরে বিজেপি নেতার আগুন: মামলা দায়ের

রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পুড়ে ছাই।

রোহিঙ্গা শিবিরে বিজেপি নেতার আগুন: মামলা দায়ের

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে বিজেপির যুব মোর্চা নেতা। এ অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে।

আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রকাশ, রোববার দিল্লিতে এক শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরার ঘটনায় বিজেপির যুব মোর্চা নেতা মনীষ চান্দেলা নিজেদের দায় স্বীকার করেছেন। তিনি ও তার সহযোগীরা ওই আগুন ধরানোর ঘটনায় জড়িত বলে জানিয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরণের স্বীকারোক্তি করায় প্রখ্যাত আইনজীবী ও সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির তিলক মার্গ থানায় মনীষ চান্দেলা নামে বিজেপি যুব নেতার বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন।

বৃহস্পতিবার প্রশান্ত ভূষণ বলেন, মামলা দায়ের ও তাকে গ্রেপ্তার করার জন্য দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্যও বিজেপির পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

প্রশান্ত ভূষণ পুলিশের কাছে নিজের অভিযোগের পক্ষে মনীষ চান্দেলার স্বীকারোক্তির টুইটার বার্তার স্ক্রিনশটও জুড়ে দিয়েছেন।

শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরানোর ঘটনায় এক টুইটার বার্তার জবাবে মনীষ চান্দেলা লেখেন, হ্যাঁ আমরাই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছি।  

তাদের দাবি, ভারতে যেকোনো জায়গায় অবৈধভাবে বাস করা তাদের ভাষায় 'সন্ত্রাসী' রোহিঙ্গা মুসলিমদের বসতির তথ্য দিলে তারা তাদের ‘আসল জায়গায়’ পৌঁছে দেবে। কিন্তু বর্তমানে ওই টুইটার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় নেই।

প্রশান্ত ভূষণের অভিযোগের আগে মুসলিম মজলিশ-ই মুশাওয়ারাত-এর পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশ কমিশনারের কাছে চিঠি দিয়ে বিজেপির ওই যুব নেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়।

গত ১৫ এপ্রিল দক্ষিণ দিল্লির কালিন্দিকুঞ্জের কাছে শরণার্থী শিবিরে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনায় দুইশ’রও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। ওই ঘটনায় প্রায় ৫০ পরিবার সম্পূর্ণ গৃহহীন হয়ে পড়ে। তাদের সর্বস্ব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গুরুত্বপূর্ণ নথির মধ্যে পরিচয়পত্র ও জাতিসংঘের দেয়া বিশেষ ভিসা-সহ অন্যান্য জিনিষপত্র নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

‘শরণার্থীদের উপরে হামলা অধর্ম’

এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভানু সরকার শুক্রবার) বলেন, ‘আরএসএস ভারতে সংবিধানবহির্ভূত একটা সমান্তরাল রাষ্ট্র চালাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতায় থাকার সুবাদে তাদের এখন বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। এরফলে তারা এসব কাজ করছে। বুক ঠুকে তা বলছে। তারা সংবিধান ও আইনকানুন মানে না। যারা দাবি করেছে যে তারা ওই আগুন ধরিয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা দরকার। ভারতের আইন অনুযায়ী তাদেরকে যথাযথ সাজা দিতে হবে।

ভানু বাবু বলেন, শরণার্থীদের উপরে হামলা ‘অধর্ম’। যারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের উপরে আঘাত করা পৃথিবীর কোনো মনুষ্যত্বের ধর্মে নেই। ভারতে কেবল রোহিঙ্গারাই নন, আরও অনেক দেশের শরণার্থীরা রয়েছে বলেও ভানু সরকার জানান।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর