কাউন্সিলরদের বেশিরভাগই মামলার আসামী
গাজীপুর সিটি নির্বাচন

কাউন্সিলরদের বেশিরভাগই মামলার আসামী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেশিরভাগই মামলার আসামী। এতে ৫৭ ওয়ার্ডের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এক ধরনের আলোচনা-সমালোচনা দেখা দিয়েছে। এ কারণে কোনো প্রার্থীকে ভোট দেবেন এমন শঙ্কায় রয়েছেন ভোটাররা। হলফনামা থেকে দেখা গেছে ২৮৬ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১১৪ জনই কোনো না কোনো মামলার আসামী।

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বরত রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মন্ডল বলেন, মামলায় সাজা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে কোনো আইনগত সমস্যা নেই।

হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরই নাম রয়েছে। তবে ৫৭ ওয়ার্ডের ৫টি ওয়ার্ডের ২০ প্রার্থীর নামে কোনো মামলা নেই। তিনটি ওয়ার্ডের প্রত্যেক প্রার্থীর নামেই মামলা রয়েছে।

হলফনামা থেকে জানা গেছে,  ১ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়জন প্রার্থীর মধ্যে তিনজন, ২নম্বর ওয়ার্ডের ৮ প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩প্রার্থীর মধ্যে দুইজন, ৪নম্বর ওয়ার্ডে চারজনের মধ্যে দুজন, ৫নম্বর ওয়ার্ডের তিনজনের মধ্যে একজন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তিন প্রার্থীর মধ্যে একজন, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে সাত প্রার্থীর মধ্যে তিনজন, ৮নম্বর ওয়ার্ডের তিনজনের মধ্যে একজন, ৯নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে দুজন, ১০নম্বর ওয়ার্ডে তিন প্রার্থীর মধ্যে একজন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজনের মধ্যে একজন, ১২নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচপ্রার্থীর মধ্যে চারজন, ১৩নম্বর ওয়ার্ডে ছয় প্রার্থীর মধ্যে একজন, ১৪নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচপ্রার্থীর মধ্যে একজন, ১৫নম্বর ওয়ার্ডে চার প্রার্থীর মধ্যে একজন, ১৬নম্বর ওয়ার্ডে দুই প্রার্থীর মধ্যে একজন, ১৭নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থীর মধ্যে ২জন, ১৮নম্বর ওয়ার্ডে ৬জন প্রার্থীর মধ্যে ৩জন, ১৯নম্বর ওয়ার্ডে ৫প্রার্থীর মধ্যে ৩জন, ২০নম্বর ওয়ার্ডে ৩প্রার্থীর মধ্যে ৩জন, ২২নম্বর ওয়ার্ডে ৮জনের মধ্যে ৬জন,২৩নম্বর ওয়ার্ডে ৭জনের মধ্যে ২জন, ২৪নম্বর ওয়ার্ডে ১২জনের মধ্যে ৫জন, ২৫নম্বর ওয়ার্ডে ৪জন প্রার্থীর মধ্যে ২জন, ২৬নং ওয়ার্ডে ৩জনের মধ্যে ১জন, ২৭নম্বর ওয়ার্ডে ৮জনের মধ্যে ৪জন, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৪জনের মধ্যে ১জন, ২৯নম্বর ওয়ার্ডে ৪জন প্রার্থীর মধ্যে ৩জন, ৩০নম্বর ওয়ার্ডে ৭প্রার্থীর মধ্যে ১জন, ৩১নম্বর ওয়ার্ডে ৬জনের মধ্যে ২জন, ৩২নম্বর ওয়ার্ডে ৪জনের মধ্যে একজন, ৩৩নম্বর ওয়ার্ডে ৬জনের মধ্যে ২জন, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৪জনের মধ্যে ২জন, ৩৫নম্বর ওয়ার্ডে ৪প্রার্থীর মধ্যে ৪জন, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩জনের মধ্যে ২জন, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৭জনের মধ্যে ৪জন, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ৪জনের মধ্যে ২জন, ৪২নম্বর ওয়ার্ডে ৬জনের মধ্যে ১জন, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪প্রার্থীর মধ্যে ২জন, ৪৫নম্বর ওয়ার্ডে ৫জন প্রার্থীর মধ্যে ১জন, ৪৬নম্বর ওয়ার্ডে ৩জনের মধ্যে ১জন, ৪৭নম্বর ওয়ার্ডে ৫জনের মধ্যে ২জন, ৪৮নম্বর ওয়ার্ডে ৪ প্রার্থীর মদ্যে ২জন, ৪৯নম্বর ওয়ার্ডে ১১জন প্রার্থীর মধ্যে ৪জন, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে ৩জন প্রার্থীর মধ্যে ১জন, ৫১নম্বর ওয়ার্ডে ৬জনের মধ্যে ২জন, ৫২নম্বর ওয়ার্ডে ৫জনের মধ্যে ২জন, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৮জনের মধ্যে ২জন,৫৪নম্বর ওয়ার্ডে ৫জনের মধ্যে ৩জন,৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৫জনের মধ্যে ২জন, ৫৬নম্বর ওয়ার্ডে ৫জনের মধ্যে ২জন এবং ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৬প্রার্থীর মধ্যে ১জনের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

এদিকে হলফনামায় দেখা গেছে, ২১নম্বর ওয়ার্ডের ৫ প্রার্থী, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৬ প্রার্থী, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ প্রার্থী, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ প্রার্থী এবং ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২ জনপ্রার্থীসহ ওই ৫টি ওয়ার্ডের কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তবে ২০নম্বর ওয়ার্ডের তিনজন, ২৮নম্বর ওয়ার্ডের তিনজন এবং ৩৫নম্বর ওয়ার্ডের চারজনসহ ওই তিনটি ওয়ার্ডের সকল প্রার্থীর নামে মামলা রয়েছে।

গাজীপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুল আলম প্রধান বলেন, মামলার আসামী যে কেউই হতে পারেন। তবে সাজা না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রার্থী হতে পারেন। আর ভালো মানুষের বিরুদ্ধেও শত্রুতাবশত মামলা হয়েও থাকে। এ জন্য মামলা হলেই তারা অপরাধী নয় যতোক্ষণ না আদালতে প্রমাণিত হয়।

তিনি আরও বলেন, যেখানে প্রার্থীদের বেশিরভাগই মামলার আসামী। তাতে বোঝা যায় স্বচ্ছ ঝামেলামুক্ত লোকেরা নির্বাচনে আসতে চান না।

তবে গাজীপুর জেলা শ্রমিকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ১৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও একই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ফয়সাল আহমেদ সরকার বলেন, সমাজে খোঁজ নিয়ে দেখুন আমার মধ্যে কোনো দুর্নীতি আছে কি না, আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে কি-না। তারপরও আমার বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। এগুলো শুধুই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল।

একই কথা বলেন, সদর থানা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ১৯নম্বর ওয়ার্ডের বতর্মান কাউন্সিলর ও এবারের কাউন্সিলর প্রার্থী তানভীর আহম্মেদ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে আটটি মামলা। তিনিও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার।

একই কথা বললেন, আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হান্নান মিয়া হান্নু। তিনি বলেন, রাজনৈতিক বহু মামলা রয়েছে যার কোনো ভিত্তি নেই।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/জিন্নাহ/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর