বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করছে শিশু সুমি খাতুন। একটু পরপর চিৎকার করে কাঁদছে। ব্যান্ডেজে মোড়ানো কাটা হাতে এখনো লেগে আছে তাজা রক্তের দাগ।
সোমবার বেলা ১১টায় হাসপাতালের মহিলা ও শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে সুমির যন্ত্রণাময় এ অবস্থা দেখা গেল।
রোববার সুমির বাঁ হাতের কনুই পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ট্রাকের চাকায়। থেঁতলে গেছে ডান হাতের তালু, রক্তাক্ত হয়েছে আঙুল। আঘাত লেগেছে মাথায়ও।হাত হারানো সুমি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শাহ বন্দেগি ইউনিয়নের ফুলতলা দক্ষিণপাড়ার ভ্যানচালক দুলাল খানের মেয়ে।
বর্তমানে সুমির চিকিৎসা চলছে অর্থোসার্জারি বিভাগের তত্ত্বাবধানে। এই বিভাগের প্রধান ও শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. রেজাউল আলম বলেন, সুমির ডান হাতের কনুইয়ের ওপর থেকে একটা অংশ সড়কেই কাটা পড়েছে। কাটা পড়া ক্ষতস্থানের রক্তক্ষরণ বন্ধে একটা অস্ত্রোপচারের পর সেলাই দেওয়া হয়েছে। পরে আরও একটা অস্ত্রোপচার লাগবে। দুর্ঘটনায় ডান হাতও ক্ষতিগ্রস্ত। মাথাতেও আঘাত পেয়েছে। তবে এখন পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত।
হাসপাতালের উপপরিচালক নির্মলেন্দু চৌধুরী সোমবার দুপুরে সংবাদ ব্রিফিং এ বলেন, রোববার বিকেলে যখন সুমিকে ভর্তি করা হয়, তখন তার সঙ্গে কেউ ছিল না। তাকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়। রক্তও দিয়েছেন হাসপাতালের একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক। রাতে চিকিৎসকদের একটি দল সুমির হাতের অস্ত্রোপচার করেন। শিশুটির পরিবার হতদরিদ্র। এ কারণে হাসপাতাল প্রশাসন সুমির সব ধরনের চিকিৎসা ব্যয়ভার গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শেরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম বলেন, সুমিকে চাপা দেওয়া ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)