অতি তরমুজে যে ক্ষতি হতে পারে?

তরমুজ

অতি তরমুজে যে ক্ষতি হতে পারে?

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বাজারে এখন প্রচুর তরমুজ পাবেন। লাল টুকটুকে ফালি করা তরমুজ জিভে জল এনে দেবে। কেউ কেউ গরমে তৃষ্ণা মেটাতেও প্রচুর তরমুজ খেয়ে ফেলেন। কিন্তু তরমুজ বেশি খাওয়া কি ঠিক?

তরমুজকে ফল ও সবজি উভয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এতে পানির পরিমাণ ৯২ শতাংশ। তরমুজ কেবল খেতেই সুস্বাদু নয়, শরীর-স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। এতে চর্বি নেই। প্রচুর ভিটামিন এ, বি, সি, পটাশিয়াম, লাইকোপেন ও সিট্রুলিনের মতো উপাদান থাকে।

যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদের জন্য তরমুজ আদর্শ খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। তরমুজের এত গুণ থাকা সত্ত্বেও একবারে খুব বেশি তরমুজ খাওয়া ঠিক নয়। একবারে বেশি তরমুজ খেলে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা জেনে নিন:

হজমে গণ্ডগোল
তরমুজে প্রচুর পানি ও ডায়েটারি ফাইবার থাকে। বেশি পরিমাণে তরমুজ খেলে হজমে গোলযোগ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, খাবার হজম না হওয়া, গ্যাসের মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। এতে চিনির যৌগ হিসেবে পরিচিত সরবিটল থাকে, যাতে গ্যাসের সমস্যা ও পাতলা পায়খানা তৈরি করে।

গ্লুকোজের স্তর বাড়ায়
যাঁদের ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে, তাঁদের বেশি তরমুজ খাওয়া ঠিক নয়। তাঁদের রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয় তরমুজ। এটিকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭২। কোন খাবারে রক্তে শর্করা কতটা বাড়ে, তা নির্ভর করে তার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এবং গ্লাইসেমিক লোডের ওপর। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭০-এর বেশি হলে তা উচ্চ মাত্রা, ৫৫-এর নিচে হলে কম মাত্রার। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যত উচ্চ, তা রক্তে শর্করা তত বেশি বাড়ায়। আবার গ্লাইসেমিক লোড ২০-এর বেশি হলে তা উচ্চ, ১১-এর নিচে কম। নিয়মিত তরমুজ খাওয়ার আগে তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

যকৃতে প্রদাহ
যাঁরা অ্যালকোহল পান করেন, তাঁদের তরমুজ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বেশি পরিমাণে তরমুজ খেলে তাঁদের যকৃতে প্রদাহ হতে পটারে। এতে প্রচুর লাইকোপেন থাকায় অ্যালকোহলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে প্রদাহ তৈরি করে। যকৃতে এ ধরনের প্রদাহ যথেষ্ট ক্ষতিকর।

শরীরে অতিরিক্ত পানি
বেশি তরমুজ খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে শরীর থেকে সোডিয়ামের পরিমাণ কমে যায়। শরীর থেকে যদি এ পানি বেরোতে না পারে, তখন নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে পা ফুলে যাওয়া, ক্লান্ত বোধ করা বা কিডনি দুর্বল হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।

হৃদ্‌রোগ
তরমুজে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা শরীর ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তরমুজ খেলে হৃদ্‌যন্ত্র সুস্থ থাকে। এছাড়া হাড় ও মাংসপেশি শক্তিশালী হয়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় পটাশিয়াম শরীরে গেলে হৃদ্‌যন্ত্রে নানা সমস্যা, যেমন: অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন, নাড়ির গতি কমে যাওয়ার মতো নানা ঘটনা ঘটে।

গবেষক ও পুষ্টিবিদেরা বলেন, ১০০ গ্রাম তরমুজে ৩০ ক্যালরি থাকে। এছাড়া প্রতি ১০০ গ্রামে ৬ গ্রাম চিনি থাকে। তরমুজে যেহেতু পানির পরিমাণ বেশি, তাই ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত তরমুজ খাওয়া অনেকের কাছে সহজ মনে হতে পারে। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/কেআই)
 

সম্পর্কিত খবর