ছেলের চেয়ে মায়ের রেজাল্ট ভালো!
এসএসসি পরীক্ষা ২০১৮

ছেলের চেয়ে মায়ের রেজাল্ট ভালো!

নাসিম উদ্দীন • নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের বড়াইগ্রামে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় মা-ছেলে অংশ নিয়ে ফলাফলে মা পেয়েছে জিপিএ ৪.২৩ ও ছেলে পেয়েছে জিপিএ ৪.০৬। মা তুলনামুলকভাবে ছেলের চেয়ে ভাল রেজাল্ট করায় ছেলে খুশি হলেও মা মোটেও খুশি হতে পারেননি।  

মা তাহমিনা বিনতে হক চেয়েছিলেন তার ছেলে তাওহীদুল ইসলাম আরও ভালো ফল করবে। তবে মা-ছেলের একত্রে পাশ করায় তাদের পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

আর এ আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে তাদের গোটা গ্রামে।  

জানা যায়, মা তাহমিনা বিনতে হক (৩৫) একজন গৃহিনী। তিনি এবার উপজেলার জোনাইল আইটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে কারিগরী বিভাগ থেকে এবং ছেলে তাওহীদুল ইসলাম (১৬) দ্বারিকুশি প্রতাপপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষা দিয়েছিলো। তাদের বাড়ি পাশ্ববর্তী গুরুদাসপুরের আনন্দনগর গ্রামে।

 

তাহমিনার স্বামী ও তাওহীদুলের বাবা আলমগীর হোসেন রঞ্জু  জানান, তিনি চাঁচকৈড় বাজারের একজন সাধারণ ওষুধ ব্যবসায়ী। এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তাদের ছোট্ট সংসার। স্ত্রী তাহমিনা নিজ উদ্যোগে বাড়িতে তিনটি গরু ও হাঁস-মুরগি পালন করেন। গরুর জন্য তাহমিনা নিজে চাষ করে ঘাস উৎপন্ন করেন। আর সে ঘাস খেয়ে তাদের একটি গাভী প্রতিদিন প্রায় আট লিটার দুধ দেয়।  

এছাড়া তাহমিনা বাড়ির পাশে ৬০টি লিচুগাছ ও ১২০টি আমগাছের বাগান দেখাশোনা করেন। এই কাজগুলো ছাড়াও  নিয়মিত রান্না-বান্না করা, ছেলে-মেয়ের লেখাপড়াসহ সংসারের অন্যান্য কাজকর্ম তো রয়েছেই। এতো কিছুর পরেও  তাহমিনার অদম্য চেষ্টা ছিলো পড়াশুনা করার।  

তাইতো তিনি ছেলের পাশাপাশি নিজেও একটি স্কুলে ভর্তি হন। তারা মা-ছেলে প্রতিদিন অন্তত ৪ ঘন্টা পড়াশুনা করেছেন। তাদের এই ফলাফলের খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই ফুল হাতে অথবা মিষ্টি হাতে মা-ছেলেকে দেখতে এসেছেন এবং এখনো আসছেন।

তাহমিনা হক জানান, এসএসসি’র মতোই মা-ছেলে এইচএসসি পাশ করার লক্ষে কলেজে ভর্তি হবেন। তবে তিনি আগামী এইচএসসি পরীক্ষায় ছেলের আরও ভালো ফল প্রত্যাশা করেন।   

নাসিম/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর
 

সম্পর্কিত খবর