এক সময় রুপাই খালে ভিড়তো বড় বড় ট্রলার। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের প্রধান নৌ পথ ছিল এই খাল। কিন্তু বর্তমানে কক্সবাজারের পেকুয়ায় অবস্থিত খালটির দুই পাশে বাধ দিয়ে দখল করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তাতে এক রকম অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে এই জলাধারটি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, খালের দু’পাড় দখল করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। মাটি ভরাট করে খালটিকে বিলীন করে ফেলছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করা হলেও কিছুতেই দখলমুক্ত হচ্ছে না খালটি।
স্থানীয়দের দাবি, বর্ষার আগে খাল দখল মুক্ত করে খনন করা না গেলে বন্যার পানিতে প্লাবিত হবে পুরো গ্রাম।
দীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে দখলে থাকা রুপাই খালে পানির প্রবাহ একেবারেই কমে গেছে। আগের মতো জালে ধরা পড়ে না মাছ। আবার, ভরা মৌসুমী মাছের দেখা মিললেও দখলদারেরা সরকারি এই খালে স্থানীয় জেলেদের নামতেই দেয় না।
খাল ভরাট করে দখল করায় প্রতি বছর বর্ষায় অতিরিক্ত পানিতে প্লাবিত হয় পুরো এলাকা। সেই শঙ্কা রয়েছে এবারো।
এ ব্যাপারে মগনামা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, ‘প্রভাবশালীদের কাছে এলাকাবাসী অসহায়। ক্রমেই খালের আকার ছোট হয়ে আসছে। কিন্তু খাল বাঁচাতে কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করা হয়নি। ’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো মাহবুবউল করিম বলেন, ৬১ একর জমির ওপর রুপাই খাল দখলে রয়েছে ৫ বছর ধরে। ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের জীবিকা ছিল এই খালকে ঘিরে। প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এই খালকে ঘিরেই গড়ে তুলেছেন বসতি। অচিরেই এই খাল দখলমুক্ত করা না গেলে গত বারের চেয়েও বড় ধরনের বন্যায় প্লাবিত হবে মগনামা ইউনিয়ন।
উপজেলা প্রশাসন বলছে, দখলদার যেই হোকনা কেন, তাকে ছাড় দেয়া হবেনা। রুপাই খাল দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসনের কাছে প্রভাবশালী দখলদার ইকতিয়ার উদ্দিন, বেলাল, আবু বকর, মো জয়নালসহ অন্তত ১৫ জনের নাম রয়েছে বলেও জানান এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা। তিনি জানান, ইকতিয়ার উদ্দিনের বিরুদ্ধে রাতের আঁধারে এস্কেভেটর দিয়ে মাটি ভরাট করার অভিযোগ রয়েছে। তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ইকতিয়ার উদ্দিন।
ঐতিহ্যবাহী রুপাই খালটি দখলদার মুক্ত করতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
ইসু/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর