স্ট্রোক কী? এর কারণ ও প্রতিকারের উপায়

স্ট্রোক কী? এর কারণ ও প্রতিকারের উপায়

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

আপনি যদি ধূমপান করেন, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় থাকেন কিংবা অবসাদে ভুগতে থাকেন। তাহলে সাবধান থাকুন। কারণ, এগুলো স্ট্রোক বা ব্রেন স্ট্রোকের প্রকৃত কারণ।

বছর দেড়েক আছে দিল্লিতে আয়োজিত তিন দিনের এক সম্মেলনে আন্তর্জাতিক স্নায়ু বিশেষজ্ঞরা জানান, ভারতে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়া রোগীর মধ্যে ২০ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের নীচে।

এ দেশে বাড়তে থাকা ধূমপানের অভ্যাস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপার টেনশনের মতো সমস্যাকেই দায়ী করেছেন চিকিত্সকরা।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রতি বছর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। সংখ্যাটা সত্যিই চমকে ওঠার মতো।

স্ট্রোক কী:-
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে, এমনকি মস্তিষ্কের কোষেও অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন।

কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হলে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষ নিস্তেজ হয়ে যায়। এটাকেই চিকিত্সকেরা স্ট্রোক বলেন।

স্ট্রোক হওয়ার কারণ:-
১। যাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তাদের স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি।

২। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। বিশেষ করে অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড প্রেশার থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

৩। স্ট্রেস ও ডিপ্রেশন সহ অন্যান্য মানসিক সমস্যা থাকলেও এই সমস্যার সম্ভাবনা থাকে।

৪। যারা দিনভর বসে কাজ করেন। হাঁটা চলা সহ কায়িক শ্রম নেই বললেই চলে তাঁদের এই রোগের ঝুঁকি অন্যদের থেকে বেশি।

৫। পুষ্টিকর খাবারের পরিবর্তে ভাজাভুজি, ফাস্ট ফুড বেশি খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

৬। ধূমপানের ফলে অন্যান্য অনেক অসুখের সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রোকের ঝুকিও অনেকটাই বেড়ে যায়।

৭। নিয়মিত অতিরিক্ত মদ্যপানের অভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

৮। যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট বা এক্সারসাইজ করেন না, তাঁদেরও স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বেশি।

৯। হার্টের অসুখ থাকলে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।

স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে করণীয়:

১। ওজন কমান। সুষম খাবার খান। ডায়েটে রাখুন পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি ও ফল।

২। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন আধ-ঘণ্টা করে দ্রুত পা চালিয়ে হাঁটতে হবে। পালে কঠিন ব্যায়াম করুন। ঘাম ঝরান।

৩। ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে।

৪। প্রতিদিন অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা ঘুমোতে হবে। এর কম হলেই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেবে।

৫। ব্লাড প্রেশার আর সুগার থাকলে তা তো নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণে রেখে চলতে হবে।

৬। ভুঁড়ি বাড়তে দেওয়া চলবে না। ডায়েট এবং ব্যায়াম করে কন্ট্রোল রাখতে হবে।

৭। শরীরচর্চার সময় খেয়াল রাখতে হবে তা যেন অত্যাধিক পরিশ্রমসাধ্য বা ক্লান্তিকর না হয়ে ওঠে।

৮। যদি আচমকা হাত, পা বা শরীরের কোনও একটা দিক অবশ, অসাড় লাগে বা চোখে দেখতে বা কথা বলতে অসুবিধে হয় অথবা ঢোক গিলতে কষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুত চিকিত্সকের শরণাপন্ন হন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর