রিয়াদ বাংলা স্কুলকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ৩ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর

নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ রিয়াদ বাংলা শাখাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া তিন কোটি টাকার অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয় সোমবার।

রিয়াদ বাংলা স্কুলকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ৩ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর

মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব প্রতিনিধি

নানা সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ রিয়াদ বাংলা শাখার আবশ্যকীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া তিন কোটি টাকার অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় স্কুল প্রাঙ্গণে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের কাছে চেক তুলে দেন স্কুলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ।

বিদ্যালয়টির ৩৬বছরের ইতিহাসে এটাই সরকার থেকে পাওয়া বড় ধরনের অনুদান বলে জানান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মো. মোসতাক আহমেদ।  

পরিচালনা পর্ষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম ও সিনিয়র শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় চেয়ারম্যান মোসতাক আহমেদের সভাপতিত্বে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বদরুল আলম।

এসময় বক্তব্য রাখেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন, রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকনোমিক মিনিস্টার ড.মোহাম্মদ আবুল হাসান, শ্রম কাউন্সেলর সারওয়ার আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন।

অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, সোনালী ব্যাংকের এজিএম আব্দুল ওয়াহাব, দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) আসাদুজ্জামান, দ্বিতীয় সচিব (প্রেস) মো. ফখরুল ইসলাম, স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সিগনেটরি আব্দুল হাকিম, কো-সিগনেটরি প্রকৌশলী গোফরান, সদস্য শফিকুল সিরাজুল হক প্রমুখ।

স্কুলের বর্তমান খারাপ অবস্থার জন্য অতীতের পরিচালনা পর্ষদের ভুল ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বলেন, একটা সময় ছিল সৌদি প্রশাসনকে ঘুষ দিয়ে স্কুলের লাইসেন্স নবায়ন করা হতো।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিদেশের স্কুলগুলোর ব্যাপারে সবসময়ই আন্তরিক আর সেই আন্তরিকতার কারণেই স্কুলকে বাঁচাতে এই অনুদান প্রদান করেছেন। স্কুলে একটি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী খুব শীঘ্রই আরেকটি অনুদান দিবেন বলে জানান তিনি।

রাষ্ট্রদূত বলেন, অনুদানের এই টাকার ব্যয় স্বচ্ছ থাকতে হবে। পরিচালনা পর্ষদের পাশাপাশি স্কুলের অভিভাবকদেরকেও এদিকে নজর রাখতে হবে। প্রতিমাসে স্কুলের আয়-ব্যয়ের হিসাব অভিভাবকদের কাছে উপস্থাপনের জন্য পরিচালনা পর্ষদের প্রতি আহবান জানান তিনি।

প্রাইভেট টিউশনি বন্ধের নির্দেশ দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, যে কোন মূল্যে বাসায় বাসায় টিউশনি বন্ধ করতে হবে। এটা একদিকে যেমন ছাত্র/ছাত্রীদের ক্ষতি করছে, অন্যদিকে এটা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনি। পড়াশুনার পাশাপাশি ছাত্রদের খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং ছাত্রীদের জন্য সেলাই কাজ শেখা ও খেলাধুলার সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আলাদা অনুদান প্রদানের ঘোষণা দেন তিনি।

অনুষ্ঠানের শেষ অংশে স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।  

উল্লেখ্য সৌদি আরবে নয়টি বাংলাদেশি স্কুলের উন্নয়নকল্পে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ১০ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রিয়াদ বাংলা স্কুলকে তিন কোটি, আল কাসিম বুরাইদা স্কুলকে ৬৭ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। বাকী সাতটি স্কুলের মাঝে অনুদানের ৬ কোটি ৩৩লক্ষ টাকা খুব শীঘ্রই হস্তান্তর করা হবে বলে জানা গেছে।  

সম্পর্কিত খবর