আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
“হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে যেমন নাকি তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপরেও ফরজ করা হয়েছিল। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। (সূরা বাকারা-১৮৩)
দেখতে দেখতে এসে গেল অপার রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের পবিত্র রমজান মাস। মহান রাব্বুল আলামিনের প্রতি অজস্র কৃতজ্ঞতা যে তিনি আমাদেরকে এমন বরকতময় একটি মাস দান করেছেন।
এ মাসে আল্লাহ তা’আলা সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ (সা.) এর ওপর কুরআনুল কারিম নাযিল করেছেন। এর মাধ্যমে আসমানি গ্রন্থ সমূহের ধারা পূর্ণতায় পৌঁছে গেলেও রাসুলুল্লাহ (সা.) এর পূর্ণ হায়াতে জিন্দেগি হল কিয়ামত অবধি সর্বকালের মানব জাতির জন্য জীবন ও জীবনের প্রতি ধাপে কুরআনুল কারিমের প্রায়োগিক নমুনা হিসেবে সামনে এসেছে।কুরআনুল কারিমের এক একটি শব্দ অতীত বর্তমান ভবিষ্যতের অনেক অনেক বিশালতাকে ধারণ করে আছে। যদি মানুষ জীবনের সর্বক্ষেত্রে কুরআনের ওপর আমল করে চলে- তার ভাগ্য বদলে যাবে।
কুরআনুল কারিমের এই আল্লাহ প্রদর্শিত নির্দেশনা থেকে জানা যায় যে, রোজার প্রকৃত উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন। তাকওয়া ও পরহেযগারি ইসলামি ইবাদতের প্রাণ ও মূল ভিত্তি। এ ব্যতীত সকল ইবাদত নিষ্প্রাণ প্রথাপালন মাত্র। কুরআনুল কারিম ও হাদিসে নববীতে কমবেশি সকল ইবাদত ও নেককাজের বুনিয়াদি উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জনই বিবৃত হয়েছে।
কুপ্রবৃত্তির আনুগত্য থেকে নিজেকে প্রতিরোধ করা, তার লাগাম টেনে ধরা এবং দ্বীনের পূর্ণ অনুসরণে নিজেকে নিয়োজিত করাই হচ্ছে রোজার আসল উদ্দেশ্য। যা আসলে তাকওয়া ও পরহেযগারি অর্জনের পরেই সম্ভব।
এ ব্যপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর এই ইরশাদ আমাদের জন্য চলার পথে আলোকবর্তিকা যে- তিনি বলেন, “রোজা ঢাল স্বরূপ। তাই রোজাদার যেন অনর্থক কথা ও অজ্ঞচিত করমে লিপ্ত না হয়। কেউ যদি তার সাথে ঝগড়া করে ও গালিগালাজ করে তাহলে সে যেন বলে আমি রোজাদার। ”
রমজানুল মোবারকে একটি দৃশ্য প্রায়ই দুঃখজনকভাবে চোখে পড়ে যে মানুষ দোকানে কিছু কিনতে নিয়ে, পথ চলতে বা শহরের যানবাহনে একে অপরের সাথে সামান্য কিছু নিয়ে তর্কে লিপ্ত হয়, তাড়াহুড়ো ও অধৈর্য প্রকাশ করে। কখনো তো বিষয়টি হাতাহাতি পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। এ সবকিছুই আসলে রোজা অবস্থায় আত্মনিয়ন্ত্রণের বিপরীত আমল এবং রোজার প্রকৃত রুহের পরিপন্থী।
মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের রমজানে সমস্ত অপছন্দনীয় ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থেকে পূর্ণ মাস বিশুদ্ধ আত্মা ও আমলের সাথে রোজা রাখার তাওফিক দান করুন এবং আমরা যেন রমজানের প্রকৃত শিক্ষা জীবনে ধারণ করতে পারি। আমিন।
অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর