‘রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্মে শিলাইদহের প্রভাব ছিল’

নিউইয়র্কে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সভায় বক্তব্য রাখছেন আতিউর রহমান।

নিউইয়র্কে আলোচনা সভায় ড. আতিউর

‘রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্মে শিলাইদহের প্রভাব ছিল’

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান বলেছেন, ‘রবীন্দ্রনাথের শিল্পকর্মে শিলাইদহের প্রভাব ছিল অপরিসীম। ’ শনিবার বিকালে নিউইয়র্কে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিক হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় ‘রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্মে শিলাইদহের প্রভাব’ শীর্ষক এই সংলাপে ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘পূর্ববঙ্গে না এলে হয়তো রবীন্দ্রনাথের জীবন ঘেষা সাহিত্য কর্মের এমন বিকাশ হতো না। জমিদার হিসেবে তিনি কৃষক প্রজাদের দুঃখ দুর্দশা ঘুরে ঘুরে দেখেছেন।

সেই আভিজ্ঞতার প্রতিফলন তার ছোট গল্প, কবিতা ও চিঠিতে গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে। ’

 ‘পাশাপাশি এই প্রজাদের ভাগ্য উন্নয়নে তিনি আধুনিক চাষবাস, উন্নত গাভি পরিপালন, কুটির শিল্প, গ্রামীণ সমবায় ব্যাংক স্থাপনসহ নানমূখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি জমীদার নয় প্রজাদের ট্রাস্টি হিসেবে পরিচিত হতে বেশি পছন্দ করতেন। পদ্মা, চলন বিল, গড়াই নদীর দুই পাশের গ্রামগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নারীর জীবনের নানা কষ্ট এবং কৃষকদের দারিদ্র্যের বিষয়গুলো অনায়াসে তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মে স্থান করে নিয়েছে’-উল্লেখ করেন এই রবীন্দ্র-গবেষক।

আতিউর বলেন, ‘গ্রাম বাংলার উন্নয়নের জন্য তিনি কৃষকদের আত্মশক্তিতে বিশ্বাসি হতে বলেছেন এবং তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বাইরের শক্তিকে দোষ না দিয়ে তিনি মনের আবর্জনা দূর করার আহ্বান জানান। ’

রবীন্দ্রনাথের এইসব মানবিক চিন্তাকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের বড় উপকরণ করার সুযোগ রয়েছে বলে ড. আতিউর রহমান মত প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক তার আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশল গ্রহণ করার সময় রবীন্দ্রনাথের এই সব মানবিক চিন্তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে বলেও আতিউর জানান।

ড. আতিউর বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ আমাদের নিত্য সঙ্গি এবং আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বরাবরই রবীন্দ্র ভাবনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন। ’ তাই, বাঙালির আগামী দিনের পথচলায় এই দুই শ্রেষ্ঠ বঙালি সর্বক্ষণ তাদের পাশে থাকবেন বলে ড. রহমান অভিমত ব্যক্ত করেন।

জাতিসংঘের একটি কর্মশালায় নিজের গবেষণামূলক বক্তব্য উপস্থাপনের জন্যে নিউইয়র্কে এসেছেন ড. আতিউর। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের এই বিষয়ভিত্তিক আলোচনা-অনুষ্ঠানে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রবাসীরা ছিলেন। এ সময় বাংলাদেশের সমসাময়িক কিছু প্রসঙ্গে উপস্থিত সুধীজনের প্রশ্নেরও জবাব দেন। ‘ইত্যাদি’ পার্টি হল’র এ অনুষ্ঠানে কোনো রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী না থাকায় সকলে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথের লেখা ‘আমার সোনার বাংলা-আমি তোমায় ভালবাসী’ গানটি পরিবেশন করে বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ্য এই কবির প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনায় অংশ নেয়া সুধীজনের মধ্যে ছিলেন হোস্ট সংগঠনের প্রধান বিশ্বজিৎ সাহা, লেখিকা রানু ফেরদৌস, নাসরীন চৌধুরী, মনিজা রহমান, সাংবাদিক কৌশিক আহমেদ, নাসিমুন্নাহার নিনি, ফাহিম রেজা নূর, ওবায়েদউল্লাহ মামুন, আকবর হায়দার কিরণ, কম্যুনিটি লিডার শাহাদৎ হোসেন এবং প্রবাসের জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী শাহ মাহবুব প্রমুখ।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর