খতম তারাবির গুরুত্ব

খতম তারাবির গুরুত্ব

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

আল্লাহর ওপর ঈমান আনা ও সালাত আদায়ের ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ হলো সাওম বা রোজা। আর পবিত্র কুরআনের সঙ্গে রোজা ও নামাজের সম্পর্ক সুগভীর।  

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করেছেন আর আমি তোমাদের জন্য তারাবির নামাজ সুন্নত করেছি। অতএব যে ব্যক্তি জামাআতে দাঁড়িয়ে সওয়াবের আশায় রমজানে দিনে রোজা পালন করবে ও রাতে তারাবির নামাজ আদায় করবে, সে গুনাহ থেকে এমনভাবে পবিত্র হবে; যেমন নবজাতক মাতৃগর্ভ থেকে (নিষ্পাপ অবস্থায়) ভূমিষ্ঠ হয়।

(নাসায়ি, প্রথম খণ্ড, ২৩৯ পৃষ্ঠা)।

রমজান মাসের সুন্নতগুলোর অন্যতম হলো কুরআন তিলাওয়াত ও তারাবির নামাজ পড়া। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.)-এর বাণী, ‘যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসে তারাবির নামাজ পড়বে, তার অতীতের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। ’ (বুখারি, প্রথম খণ্ড, ৩০ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৩৬; ই. ফা.)।

তারাবি শব্দটি বহুবচন। এর একবচন হলো তারবিহা; যার আভিধানিক অর্থ হলো বিশ্রাম, স্বস্তি, শান্তি ও প্রশান্তি। রমজান মাসে এশার নামাজের পর যে সুন্নতে মুয়াক্কাদা ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, তাকে তারাবির নামাজ বলে। (আল কামুসুল ফিকহ)।

হজরত ইবনে রুমান (রহ.) বলেন, হজরত উমর (রা.)-এর খিলাফতের সময় মানুষ ২৩ রাকাতের (৩ রাকাত বিতরসহ তারাবি নামাজ) মাধ্যমে রাত্রি জাগরণ করত। (মুআত্তা ইমাম মালিক, প্রথম খণ্ড, ১১০ পৃষ্ঠা, হাদিস: ২৮১; আবু দাউদ, প্রথম খণ্ড, ৬৯৯ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৪২৮৯)।

হজরত আবুজার গিফারী (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলে করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে তারাবি নামাজ পড়ল, ইমাম প্রস্থান করা পর্যন্ত (জামাতে নামাজ সমাপ্ত করে গেল) তার কিয়ামে লাইল (রাত জাগরণের সওয়াব পূর্ণরূপে) লিখিত হবে। ’ (তিরমিজি, তৃতীয় খণ্ড, ১৬১-১৬৯ পৃষ্ঠা, হাদিস: ৮০৬)।

শাঈখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন: মক্কা ও মদিনা শরিফে সাহাবায়ে কেরামের সময় থেকে আজ পর্যন্ত সব সময় ২০ রাকাত তারাবি খতমে কোরআনসহ জামাতের সঙ্গে পড়া হয়। কেউ যদি জামাআতে ২০ রাকাত তারাবি পূর্ণ না করে চলে যায়, তার খতমও পূর্ণ হয় না।

তারাবির ২০ রাকাত নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। পুরুষদের তারাবির নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা সুন্নত। তারাবির নামাজে কুরআন শরিফ খতম করাও সুন্নত। নারীদের জন্যও ২০ রাকাত সুন্নত করা হয়েছে। তারাবির নামাজের সময় হলো- এশার নামাজের পর থেকে ফজরের নামাজের আগ পর্যন্ত।

রমজান মাস কুরআন নাজিলের মাস। শবে কদরে কুরআন নাজিলের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছে। নবী করিম (সা.) রমজান মাসে পুরো কুরআন শরিফ হযরত জিবরাইল (আ.)-কে একবার শোনাতেন এবং জিবরাইল (আ.)-ও নবী করিম (সা.)-কে পূর্ণ কুরআন একবার শোনাতেন। বড় বড় সাহাবিরাও রমজানে প্রতি সপ্তাহে সমগ্র কুরআন একবার তিলাওয়াত করতেন। এভাবেই রমজানে একাধিকবার কুরআন খতম হতো।  

যদি কেউ প্রতিদিন এক পারা করে কুরআন তিলাওয়াত করেন, তাহলেই রমজানে তার কুরআন খতম হবে। রমজানে নিয়মিত তিলাওয়াত ও খতমের জন্য এর চেয়ে কম কোনো অংশ নেই। আর সেটা করার সুবর্ণ সময় তারাবির নামাজ।

কুরআন তিলাওয়াতে যেমন সওয়াব, কুরআন পাঠ শ্রবণেও একই রকম সওয়াব। আর খতমে তারাবি এই সওয়াব লাভের সবচেয়ে বড় সুযোগ।


 অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর