ভাতৃঘাতি সংঘাতে ফের অশান্ত পাহাড়

ভাতৃঘাতি সংঘাতে ফের অশান্ত পাহাড়

ফাতেমা জান্নাত মুমু  • রাঙামাটি

 নিহত ৩ ইউপিডিএফ কর্মীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

 এখনো মামলা হয়নি

রাঙামাটিতে গেল দেড় বছরে ২৭ খুন

✪ চলতি মাসে প্রতিপক্ষের ব্রাশফায়ারে নিহত ৯ জন


===============

আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর ভাতৃঘাতি সংঘাতে ফের অশান্ত হয়ে পড়েছে পাহাড়। মাত্র ২৫দিনের মাথায় আবারও হত্যাযজ্ঞ। ঝরলো আরও ৩ প্রাণ। এ নিয়ে শুধু রাঙামাটিতেই গেল দেড় বছরে খুনের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭-এ।

 

শুধু রাঙামাটি নয়, অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে একইভাবে চলছে খুন, গুম ও অপহরণের ঘটনা। যার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান এখনো জানা যায়নি।  

পুলিশ বলছে, এসব ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে মামলা করতে চায় না ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। তাই বিচারও হয়না।

কিছু কিছু সংঘাতের ঘটনা প্রকাশ হয়, আবার কিছু হয়না। তাই পাহাড়ের বুকে চাপা পড়ে থাকে হাজারো মানুষের আত্মচিৎকার।  

পার্বত্যাঞ্চলে একের পর এক সংঘাতের ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুললেও এ নিয়ে সরকার ও প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। আজ পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু সমাধানও হয়নি। তাই পাহাড়ে বসবাসরত মানুষগুলোর মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।

সবশেষ সোমবার (২৮মে) বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের গঙ্গ্যারামমুখ কড়ল্যাছড়ি গ্রামে প্রতিপক্ষের ব্রাশ ফায়ারে নিহত হন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) কর্মী সঞ্জীব চাকমা, স্মৃতি চাকমা ও অটল চাকমা। তাদের হত্যাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে ফের সহিংসতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।  

আজ আতঙ্কে বসেনি কোনো হাট-বাজার। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি-সাজেক- বাঘাইছড়ি উপজেলা সড়কে চলাচল করেনি কোনো যানবাহন। সাজেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে এখনো।

তবে রাঙামাটি জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর কবির বলছেন, আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এসব সহিংসতার ঘটনায় স্থানীয় সাধারণ মানুষের জীবনে তেমন বিরূপ প্রভাব পড়বে না। তাছাড়া সাধারণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সর্বাত্মক প্রস্তুত। বর্তমানে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।  

এদিকে, মঙ্গলবার নিহত ৩ ইউপিডিএফ কর্মীর মরদেহ খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছে পুলিশ। হাসপাতালের মর্গে তাদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত নিহতদের লাশ হস্তান্তরের বিষয়ে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করেনি তাদের পরিবারের কোনো সদস্য। তাছাড়া হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এখনো পর্যন্ত মামলা করেনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার- বলে জানান সাজেক থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ কামরুজ্জামান।

প্রসঙ্গত, গেল ৩মে পাহাড়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমা নিহত হন। পরদিন শক্তিমানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যাবার পথে প্রতিপক্ষের ব্রাশফায়ারে একইভাবে নিহত হন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের প্রধান তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মাসহ ৫ জন। ওই ঘটনায় আহত হয় আরো ৮জন।  

চলতি মাসে এই নিয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গুলিতে রাঙামাটিতে খুনের সংখ্যা দাঁড়ালো ৯জনে।

===============

মুমু/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর