আত্মোৎসর্গকারী ৪ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে জাতিসংঘের সম্মাননা প্রদান

জাতিসংঘ মহাসচিবের হাত থেকে দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল গ্রহণ করছেন রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন [ছবি: এনআরবি নিউজ]

আত্মোৎসর্গকারী ৪ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীকে জাতিসংঘের সম্মাননা প্রদান

এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক থেকে

শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত বাংলাদেশের ৪ শান্তিরক্ষীসহ বিশ্বের ৩৭টি দেশের ১২৮ জন আত্মোৎসর্গকারী শান্তিরক্ষী কর্মীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ প্রদান করলো জাতিসংঘ।  

কাল (১ জুন) জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসে আয়োজিত এক শোকাচ্ছন্ন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশসহ ৩৭টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে এই মেডেল তুলে দেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই মেডেল গ্রহণ করেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।  

আত্মোৎসর্গকারী ৪ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী হলেন- ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক মো. আব্দুর রহিম, ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মালি মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত সিপাহী মো. মনোয়ার হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল মো. জাকিরুল আলম সরকার ও সার্জেন্ট মো. আলতাফ হোসেন।

 

বাংলাদেশ মিশনের প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদসহ জাতিসংঘে কর্মরত বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষী কর্মীর বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লেনে অবস্থিত পিসকিপিং মেমোরিয়াল সাইটে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।  

জাতিসংঘ নিযুক্ত সদস্য রাষ্ট্রসমূহের স্থায়ী প্রতিনিধিগণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনৈতিক, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেত সুধীমণ্ডলীর উদ্দেশ্যে অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আজ থেকে ৭০ বছর আগে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রথম মিশন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৩৭০০ জনেরও বেশি সামরিক, বেসামরিক ও পুলিশ কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন।

এ সকল শান্তিরক্ষীগণ অন্যদের জীবন রক্ষা করার জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা সারা জীবন তাঁদের কাছে ঋণী এবং তাঁরা সবসময়ই আমাদের অন্তরে গভীর মমতায় প্রোথিত থাকবেন। ’

কর্মক্ষেত্রে শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমি জাতিসংঘের সকল কর্মীদের বিশেষ করে সম্মুখ সারিতে নিয়োজিত সৈনিকদের সুরক্ষার উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ’

তিনি বিশ্ব শান্তির জন্য জীবনদানকারী এ সকল শান্তিরক্ষী কর্মীদের সর্বোচ্চ অবদান গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। এর আগে আত্মদানকারী শান্তিরক্ষীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

উল্লেখ্য, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৪৩জন শান্তিরক্ষী মৃত্যুবরণ করেছেন।

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর
 

সম্পর্কিত খবর