পেশায় ওয়াচম্যান (প্রহরী)। দৈনিক মুজুরীতে চাকরি করেন। নিজের সংসার চালাতে যিনি হিমশিম খান। তিনিই আবার ছুটি নিয়ে রমজান মাসে মানব সেবার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
রোজদারদের খেদমতে ২ যুগ ধরে বিনামূল্যে বিলি করছেন মেসওয়াক।নাম তার মাহাতাব উদ্দিন। বয়স ৫৪। নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার চকমহাপুর গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি মনে করেন, কেউ হুকুম করার আগেই যদি তার মেসওয়াকটা হাতের কাছে এনে দেওয়া যেত, তাহলে লোকটি বোধ হয় আরো খুশি হবেন। সেই ভাবনা থেকেই শুরু। এরপর ২ যুগ ধরে রমজান মাসে মেসওয়াকের ব্যাগ নিয়ে ঘুরে বেড়ান নাটোর-রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন হাটে-বাজারে, মসজিদের সামনে। আর বিতরণ করেন বিনামূল্যে এসব মেসওয়াক। এতেই তাঁর আনন্দ। তিনি বলেন, সেহরী খাওয়ার পর থেকে সারা সকাল মেসওয়াক বানিয়ে দুপুরের পরই বেরিয়ে পড়েন বিতরণ করতে। এ কাজে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা তাঁকে সহযোগিতা করেন। মূলত তিনি নিম গাছের ডাল দিয়ে মেসওয়াক বানান। একাজের জন্য নিম গাছের মালিকরা তাকে দাওয়াত করে ডেকে নিয়ে যান। তাছাড়া বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য ঔষধি গাছ আপাংয়ের ডালের বিশেষ মেসওয়াক তৈরি করেন তিনি।
তিনি জানালেন, সারা বছর ছুটি না কাটিয়ে সেগুলো জমা করে রাখেন। রমজান মাস এলেই পুরো মাসের ছুটি নিয়ে নেমে পড়েন এ কাজে। শুরুর দিকে কর্তৃপক্ষ ছুটি দিতে না চাইলেও তার এ কাজের নেশায় এখন আর বাধেন না।
মাহাতাব জানান, সংসার জীবনে তিনি তিন সন্তানের জনক। বছর ১৩ পূর্বে একমাত্র মেয়ে মুক্তার বিয়ে দিয়েছেন। বড় ছেলে মধু একাদশ পাশ করে আনসার বাহিনীতে সদস্যপদে চাকরি করছে। আর ছোট ছেলে সম্রাট অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/নাসিম/তৌহিদ)