চীনের ডাইনোসর কুমিল্লার ডাইনাপার্কে!

চীনের ডাইনোসর কুমিল্লার ডাইনাপার্কে!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

এবার ঈদের ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাবেন এ নিয়ে হয়তো ভাবছেন অনেকেই। চিন্তা নেই, প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন ঢাকার কাছেই কুমিল্লার ডাইনো পার্কে। কুমিল্লার কোর্টবাড়ির ডাইনো পার্কে বেড়াতে গেলে স্বাগত জানাবে একদল ডাইনোসর। ভয় পাবেন না! ভাবতে পারেন টাইম মেশিনে চড়ে কোনো জুরাসিক পার্কে চলে এসেছেন।

আসলে এগুলো কৃত্রিম ডাইনোসর।

ডাইনো পার্কে আছে পাঁচটি ডাইনোসর। কৃত্রিম ঝরনা বেষ্টিত প্রাগৈতিহাসিক যুগের দানবীয় চেহারার প্রাণিগুলোকে দেখানোই প্রধান কাজ। সুইচ টিপলেই ডাইনোসর গর্জন করে, লেজ নাড়ে আর চোখ ঘুরায়।

মূলত দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতেই ডাইনো পার্ক প্রতিষ্ঠা করেন এইচ এম আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি পার্কটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)।

news24bd.tv

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার সাথে বিনোদনের মিশেল ঘটিয়ে ডায়নো পার্কটি করা। আপনি বলতে পারেন, শিক্ষা ও বিনোদন একসাথে-কুমিল্লার ডাইনাপার্ক।

নতুন এ বিনোদনকেন্দ্র সারা দেশে ডাইনো পার্ক নামে পরিচিতি পেয়েছে। ঢাকার অদূরে  কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের ১২ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নতুন ধরনের একটি পার্ক। ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা এই পার্কে ঢুকে পিলে চমকে যেতে পারে। এখানে হাজার বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া প্রাণীর দেখা মিলবে! যারা বেড়াতে ভালোবাসেন আর রোমাঞ্চকর অনুভুতির সারথী হতে চান তাদের জন্যে এ পার্কটি স্বপের জায়গা হতে পারে বলে মনে করছেন দর্শনার্থীরা। পার্কে চীন থেকে আনা পাঁচটি কৃত্রিম ডাইনোসর রাখা হয়েছে। সুইচ টিপলেই যারা গর্জন করে, লেজ নাড়ে আর চোখ ঘুরায়।

উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, নতুন প্রজন্মকে বিলুপ্ত ডাইনোসরের সম্পর্কে ধারণা দিতেই এ উদ্যোগ। সারা দেশ বিশেষ করে কুমিল্লা ও আশপাশের জেলার লোকজনকে নির্মল আনন্দ দেওয়ার জন্য মাশফিকা হোল্ডিংস লিমিটেড এই পার্ক তৈরি করেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে এক পরিবারের চার ভাই ও তাঁদের বাবা এর উদ্যোক্তা। পার্কে প্রবেশপথে হেরিটেজের মতো তিনতলা ভবন রয়েছে। দিনের চেয়ে রাতের বেলায় এ পার্ককে আরও আকর্ষণীয় মনে হয়। কেবল ডাইনোসর দেখা নয়, এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের রাইড।

সমতল ভূমি থেকে ৪৫ ফুট ওপরে অবস্থিত এ পার্ক। তারও ওপরে রয়েছে প্যারিজ হুইল, যা আই অব লালমাই নামে পরিচিত। ওই রাইড থেকে ১০০ ফুট ওপরে লালমাই পাহাড়ের মনভোলানো রূপ দেখা যায়। ডাইনোসর দেখার পর দক্ষিণ দিকের টিলায় ওঠার জন্য ৪০টি সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হবে।

বেড়ানোর ফাঁকে খাওয়ার জন্য এখানে রয়েছে দ্য হিল ক্যাফে রেস্টুরেন্ট। বাঁশের মাচার ওপর তৈরি ওই হোটেলে খেতে বসে প্রকৃতি দেখতে পারবেন। রোস্তোরাঁর এক পাশে আছে দ্য ডেক সাইড। যেখানে একসঙ্গে ১৩৫ জন বসতে পারে।

আই অব লালমাইতে ১২টি বগি রয়েছে। যাতে ২৪ জন একসঙ্গে বসতে পারবে। অক্টোপাসে একসঙ্গে বসতে পারে ১৫ জন, মেরি গো রাউন্ডে ২৪ জন, সেলফ কন্ট্রোল প্লেনে ৮ জন, বাম্পার কারে ১০ জন এবং ড্রাগন কোস্টারে ২০ জন। শিশুদের জন্য আছে ১৩টি রাইড।

আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া  বলেন,  চীনে ঘুরতে গিয়ে ডাইনোসর জাদুঘর দেখি। সেই ধারণা কাজে লাগিয়ে কুমিল্লায় দুই বছর ধরে এ কাজ করেছি। চীন থেকে লোক এনে এই রাইড ও ডাইনোসর বসানো হয়েছে। এটি আমাদের পারিবারিক উদ্যোগ। ’

তিনি আরো বলেন,  আমরা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে লালমাইতে পার্কটি স্থাপন করি । গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনোদনকেন্দ্রটি যাত্রা শুরু করে।  

এখানে বেড়াতে আসা লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,  ডাইনো পার্কে এসে আশপাশের শালবন বৌদ্ধবিহার, ময়নামতি জাদুঘর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বোটানিক্যাল গার্ডেন, বৌদ্ধ সভ্যতা নিদর্শন দেখা যায়।

news24bd.tv

প্রবেশ মূল্য: 
পার্কে প্রবেশমূল্য ২০০ টাকা। এছাড়া বড়দের জন্য রাইডের ফি ১০০ টাকা, ছোটদের জন্য ৫০ টাকা। সেই সঙ্গে যেকোনো প্রতিষ্ঠান চাইলেই এখানে পিকনিক কিংবা কর্মশালার আয়োজন করতে পারে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পার্ক খোলা থাকবে।  

যেভাবে যাবেন:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার বেলতলি অথবা নন্দনপুর এলাকা দিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা পার হয়ে কিছুটা সামনে গেলেই ডাইনো পার্ক। এ ছাড়া কুমিল্লা শহর থেকে ২২০ টাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করেও যাওয়া যায়। দল বেঁধে কিংবা ভেঙে ভেঙে গেলে কোটবাড়ি থেকেও কম ভাড়ায় যাওয়া যায়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর