রাঙামাটির বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

রাঙামাটির বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত

রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটির ৬টি উপজেলায় এখনো বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। দুর্ভোগ বেড়েছে পানিবন্দী মানুষের। দূষিত পানি কারণে বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া, আমাশয়, পেটের পীড়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে। এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

পাহাড়ি ঢলে ঘোলা, ময়লাযুক্ত ও দূষিত হয়ে এসব পানির উৎস ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এমনকি কাদাযুক্ত পানি ভূ-গর্ভে প্রবেশ করায় রিংওয়েল এবং নলকূপগুলো থেকেও ঘোলা পানি বেরিয়ে আসছে। তাই তীব্র হয়ে উঠেছে বিষুদ্ধ পানির সংকট। এরই মধ্যে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বাঘাইছড়ি উপজেলার ১৬টি গ্রাম।
তাই বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঘাইছড়ি উপজেলার হাজি পাড়ায় পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম- উত্তম ত্রিপুরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাহাড়ি ঢল আর বন্যায় ডুবে গেছে রাঙামাটির ৬টি উপজেলার নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে এসব উপজেলার প্রায় ১০ হাজারের অধিক পরিবার। পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা উপড়ে পড়া গাছ-গাছালি, লতাগুল্ম ও বিস্তর কচুরিপানা কাপ্তাই হ্রদজুড়ে সৃষ্টি করেছে ভাসমান জঞ্জালও। রাঙামাটি জেলা বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর উপজেলার- কালাপাকুজ্জা, গুলশাখালী, বগাচতর, গাথাছড়া, ভাসান্যাদম, মাইনীমুখ, বালুখালী, আদারক ছড়া ইউনিয়ন এলাকায় বসবাসরত পরিবারগুলো পানিবন্ধী হয়ে মানবতর দিন কাটছে। হ্রদ তীরবর্তী গ্রামের রাস্তা গো-চারণ ভূমি, শুকটি মাছ শুকানোর স্থানসহ মানুষের বাড়ি-ঘর ডুবে গেছে। ওই অঞ্চলের ঘর-বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় খুঁজে বেড়াচ্ছে অনেকেই। আবার অনেকে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকদের ফসলি জমি। বোরো ধান, কাকরল, শষা ও কাঁচা মরিচের বাগানও।

রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম সফি কামাল জানান, যে সব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে সেখানে জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে। বন্যাদূর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে প্রতিবছর ভারী বৃষ্টিপাতারে কারণে রাঙামাটি জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়। তার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নত করা হয়েছে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিং। দীর্ঘ দিন ধরে ড্রেজিং না হওয়ায় হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। তাই বর্ষা মৌসুমে হ্রদ তীরবর্তী বসবাসরত পরিবারগুলো সমস্যায় পরে। এ সমস্যা উত্তরণের জন্য হ্রদের ড্রেজিংয়ের দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/মুমু/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর