মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্যার্থে নিয়ে আসা ত্রাণ সামগ্রী উপজেলা প্রশাসনের কট্টোল রুমে জমা না দিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে বিতরণ করা হচ্ছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে অসহণীয় যানজট। ত্রাণ নিতে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে গিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গাড়িচাপায় বালুখালী পান বাজার এলাকায় দুই শিশু ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
যত্রতত্র ত্রাণ বিতরণের কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দীর্ঘ ৮৪ কিলোমিটার জুড়ে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এতে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীসহ দূরপল্লার যাত্রীরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে। এদিকে ত্রাণ বিতরণে নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।
সরজমিনে শুক্রবার উখিয়ার কুতুপালং নতুন বস্তি এলাকা টিভি রিলে কেন্দ্রের পাশে দেখা যায়, স্থানীয় একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে কিছু যুবক ট্রাকে করে গার্মেন্টস- এর কাপড় বিতরণ করছে।
কুতুপালং রাস্তার পাশে আশ্রয় নেওয়া বয়োবৃদ্ধ রোহিঙ্গা খুইল্যা মিয়া (৭৯) জানান, আশেপাশে যারা আছে তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মালামাল পেয়ে থাকলেও আমি এই পর্যন্ত কিছুই পাইনি।
বালুখালী এলাকার আকবর আহমদ জানান, সড়কের উপর গাড়ি থামিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ত্রাণ বিতরণ করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। ত্রাণ নিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ১০ বছরের ২ জন রোহিঙ্গা শিশু এবং শুক্রবার সকালে ২ সন্তানের এক জননী মারা গেছে। তবে তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি। এভাবে সড়কে যানজট সৃষ্টি করে ত্রাণ বিতরণ বন্ধের দাবি জানান আরো অনেকে।
শাহপুরী গার্ডেনের ম্যানেজার ও বালুখালী কাস্টম্স এলাকার ছৈয়দ আলম জানান, সড়কের উপর বেপরোয়া ত্রাণ বিতরণ ও মালামাল বিতরণ করার কারণে প্রতিদিন কুতুপালং থেকে পালংখালী পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করার কথা থাকলেও প্রশাসনের দায়সারা মনোভাবের কারণে দানশীল লোকজন তাদের কন্ট্রোলরুমে তেমন ত্রাণ জমা দিচ্ছেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, যত্রতত্র ত্রাণ বিতরণের কারণে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। আর অনেকে ত্রাণ বঞ্চিত হয়ে থাকে। ব্যক্তি বা সংগঠনের উদ্যোগে দেওয়া ত্রাণগুলো সুষ্ঠুভাবে বিতরণের জন্য কুতুপালংয়ে কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।