পালিয়ে আসতে গিয়েও সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে প্রাণ হারাচ্ছে রোহিঙ্গারা। তাই এবার অনুপ্রবেশের পথ হিসেবে সমুদ্রকেই বেঁছে নিয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। আর ট্রলারে করে বাংলাদেশে আসতে মাথাপিছু পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা করে দিচ্ছে তারা দালালদের।
অনেকে শেষ সম্বলটুকুর বিনিময়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আসছেন।
গত ২৫ আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।কিছুক্ষণ পর পর টেকনাফ উপকূলে রোহিঙ্গা শরণার্থী বোঝাই একরকম অনেক মাছ ধরা ট্রলার ভিড়ছে। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউ মোকাবেলা করার পর রোহিঙ্গারা টেকনাফে পৌঁছাচ্ছেন। তীরে এসে ট্রলার থামার পর ক্ষুধা-ক্লান্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকে।
এদিকে প্রথম দিকে অনুপ্রবেশে বাধা দিলেও মানবতার খাতিরে এখন আর কাউকে ফিরিয়ে দিচ্ছে না সীমান্তরক্ষীরা। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেওয়া হচ্ছে আশ্রয় ও খাবার।
বিজিবি লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম বলেন, যারা টাকার বিনিময়ে উদ্ধার করছে তারা প্রকৃত উদ্ধারকারী নয়। উদ্ধার কাজে কোনো টাকা নেওয়া উচিত না। অর্থ ছাড়াই এটা করা উচিত। যেসব রোহিঙ্গা আসছে তাদের আমরা সাহায্য করছি। কিন্তু এ সুবিধা নিয়ে যাতে কোনো ধরনের মানবপাচার না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিকভাবে স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে নানা কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৮-২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশন। এ অধিবেশনে অংশ নেবেন না মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চি। অংশ নিতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর তার নিউইয়র্ক পৌঁছানোর কথা।
এবার সাধারণ অধিবেশনে শেখ হাসিনার বক্তৃতায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিশ্বসভায় জোরালো বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। বাস্তবতার আলোকে এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্যে কিছু প্রস্তাবও পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন আমেরিকায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন।