নারায়ণগঞ্জে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা : স্বামী রিমান্ডে

নারায়ণগঞ্জে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা : স্বামী রিমান্ডে

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে প্রথম স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় আটক স্বামী মাসুদ দেওয়ানের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।  

আজ (২৫ জুন) তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল মহসীনের আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর আদালত।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এসআই কামাল হোসেন রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে রোববার (২৪ জুন) কিলিং মিশনে থাকা গ্রেপ্তার চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেল নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার মাসুদ দেওয়ান চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার দক্ষিণ শাশাআলী এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে। তার চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেল নেত্রকোনার খালিয়াজুরী থানার ফতুয়া এলাকার স্বপন মিয়ার ছেলে।

নিহতরা হলো- মাসুদের স্ত্রী নোয়াখালীর সেনবাগের পদুয়া এলাকার সোলেমানের মেয়ে আঞ্জুবী আক্তার (২৮) ও তার দুই মেয়ে ৭ বছর বয়সী মাঈদা আক্তার ও ১৫ মাস বয়সী মাহী।

পুলিশ জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিং মসজিদ গলির কবির মিয়ার বাড়ির ৬ তলার ফ্লাটটি ভাড়া নেন মাসুদ দেওয়ান।

তিনি তার প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী আক্তারের অমতে তারই বান্ধবী শোভা আক্তারকে বিয়ে করেন। এই বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই ছিল। এরই জের ধরে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা আক্তার ও চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেলকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম স্ত্রী আঞ্জুবী আক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।  

পরিকল্পনা অনুযায়ী, গেল ৯ জুন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও চাচাতো শ্যালক মিলে প্রথমে আঞ্জুবী আক্তারকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে বড় মেয়ে মাঈদা ও ছোট মেয়ে মাহীকেও শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর আঞ্জুবী আক্তারের মরদেহ বস্তায় ভরে সিদ্ধিরগঞ্জের বার্মাস্ট্যান্ড ভাঙ্গারীপুলের পাশে ডিএনডি ক্যানেলের পাড়ে ও দুই সন্তানের মরদেহ সিদ্ধিরগঞ্জের আটি এলাকার একটি পুকুরে ফেলে দেন।

১১ জুন বিকেল ৫টায় সিদ্ধিরগঞ্জের ভাঙ্গারপুল এলাকার ডিএনডি ইরিগেশন খালের পাশ থেকে ড্রামের মধ্যে থেকে আঞ্জুবী আক্তারের (২৮) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর গত ১৬ জুন আটি হাউজিংয়ের আলী মোহাম্মদের মাছের খামারে ভাসতে থাকা বস্তাবন্দি অবস্থায় ১৫ মাস বয়সী শিশু মাহীর মরদেহ ও ১৮ জুন আটি এলাকার একই খামারে ভাসতে থাকা একটি ব্যাগ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শিশু মাঈদা (৭) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে ঘাতক মাসুদ দেওয়ান ও চাচাতো শ্যালক সবুজ ওরফে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে সবুজ ওরফে সোহেল আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক অঞ্চল) মো. শরফুদ্দিন জানান, ঘাতক মাসুদ দেওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। তবে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভা পলাতক রয়েছেন।

অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর

সম্পর্কিত খবর