বৃষ্টিতে পাহাড়ে আতঙ্ক, সতর্কতামূলক মাইকিং

টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বাড়ছে।

বৃষ্টিতে পাহাড়ে আতঙ্ক, সতর্কতামূলক মাইকিং

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে যেন বৃষ্টি থামছেই না। ফলে কাটছে না নতুন করে পাহাড় ধসের শঙ্কা। তাই পাহাড়ে বৃষ্টি হলেই শুরু হয় মাইকিং। কারণ পাহাড়ের গায়ে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি খেলা দেখতে যতটাই না সুন্দর, সেখানে বাস করা মানুষের জন্য ততটাই ভয়ঙ্কর।

আর তাই অবিরাম বর্ষায় পাহাড়ে বেড়েছে আতঙ্ক।

গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে পাহাড়ে অবিরাম বৃষ্টিপাত। কখনো হালকা, কখনো মাঝারি, আবার কখনো ভারি বর্ষণ হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে এখনই সরে যেতে মাইকিং অব্যাহত রেখেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন।

তবে পাহাড়ধস নিয়ে নানা সংকটের মুখে পড়েছে সাধারণ জনগণ। news24bd.tv
হঠাৎ করে মালপত্র নিয়ে কোথায় গিয়ে উঠবে, কী খাবে- মিলছে না সদুত্তর। অন্যদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, চলতি বছর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে এবার রাঙামাটিতে। গত জুন মাসে রাঙামাটিতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ২৫৭মিলিমিটার। এ মাসে বৃষ্টির তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রাঙামাটি আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তা ক্যাচিনু মারমা জানান, রাঙামাটিতে কখনো হালকা, কখনো মাঝারি, আবার ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এছাড়া সারাদিন গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিপাত পাহাড়ের জন্য তেমন ভাল লক্ষণ না। এমনভাবে কতদিন চলবে তা বলা মুশকিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে প্রাণ গেলো ১১ জনের। এ ঘটনার পর পাহাড়ে বৃষ্টি দেখলে বাড়ে আতঙ্ক। কারণ পাহাড়ের মাটি এখনো নরম। তাই নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না কিছু। ঘটতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। গেলো বছর রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের সেই চিহ্ন এখনো মুছে যায়নি। এখনো রয়ে গেছে সড়কে সড়কে ফাটল। এখানে শেষ নেই। চলতি বছরেও নতুন করে বৃষ্টিপাতের কারণে আবারও ভেঙেছে বিভিন্ন সড়ক। ধসে পড়ছে পাহাড়, দেয়াল, বসতঘর। উঠে গেছে সড়কের প্লাস্টার ও কংক্রিট। এতে বেড়েছে মানুষের দুভোর্গ। দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

রাঙামাটির জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, রাঙামাটিতে কয়কদিন ধরে টানা হালকা ও মাঝারি বর্ষণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা বেড়েছে। তাই এখনো যারা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছে তাদেরকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করে বলা হচ্ছে। এখন জনসাধারণ সচেতন না হলে কোন দূর্যোগ এড়ানো সম্ভব হবে না। তবে যে কোন দূযোর্গ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া গত বছরের পাহাড় ধসের ভয়াবহতা দেখার পর মানুষ এখন অনেক সচেতন। আশা করছি এখন আগের মত কোনো ধরণের অঘটন ঘটবে না। এ বছর রাঙামাটি শহরের ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রও খোলা রয়েছে পর্যাপ্ত।  
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুন প্রবল বর্ষণের কারণে রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধসে ১১ জন নিহত হন। তবে রাঙামাটি শহর ও অন্য উপজেলাগুলো থেকে কোনো ধরণের নিহতের খবর পাওয়া যাইনি।

সম্পর্কিত খবর