শিবচরে নদীভাঙ্গনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

নদীভাঙ্গনের ভয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

শিবচরে নদীভাঙ্গনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরের শিবচরে চরজানাজাত এলাকায় নদীভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ফলে বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

জানা যায়, পদ্মা নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চল হওয়ায় প্রতি বছরই উপজেলার চরজানাজাত এলাকাটি নদী ভাঙনের কবলে পরে। ফলে এ এলাকার  জনগণের ব্যাপক ক্ষতি হয়।

স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা পরে চরম দুর্ভোগে। পূর্বেই এ এলাকার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধি ও প্রবল স্রোত হওয়ায় এ বছরও এই অঞ্চলের একমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়টি বিলীন হওয়ার পথে। দুএক দিনের মধ্যে পুরো বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে চলে যাবে।
এ জন্য ভবনটি সরানোর কাজ চলছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বর্ষা মৌসুম এলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবন চিত্র অনেকটাই পাল্টে যায়। দিনের বেশিরভাগ সময় নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়। শিবচর উপজেলার চরজানাজাত ইউনিয়নের প্রায় অংশই এখন নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এক সময়ের শতশত জমির মালিকরা আজ নিঃস্ব হয়ে অন্য এলাকায় খাজনায় বসতবাড়ি তুলে কোনো রকমে বসবাস করছে।

ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ রাশিদা বেগম জানান, কোনো এক সময় আমার স্বামীর ৪০-৫০ বিঘা জমি ছিল। আজ আমাদের ১ বিঘা জমিও নাই। পদ্মা নদী আমাদের সব জমি কেড়ে নিয়েছে। এখন আমরা পরের জমিতে কোনো রকমে ঘর তুলে বসবাস করছি।

চরজানাজাত ইউনিয়নের বাসিন্দা রফিক বেপারী জানান, বর্ষা মৌসুমে এলে আমাদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে যায়। সারাদিন দুঃশ্চিন্তায় থাকি এই বুঝি নদী ভাঙনে আমাদের ভিটেমাটি নিয়ে যাবে।

চরজানাজাত ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো। সুলতান মাহামুদ জানান, প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে খুবই কষ্টের সঙ্গে বলতে হয় চরজানাজাত ইলিয়াস আহম্মেদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়ার জন্য প্রহর গুনছে। যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে মনে হয় ২/১ দিনের মধ্যে এই বিদ্যালয়টিও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বিদ্যালয়টি নদী থেকে মাত্র ১০০ ফুট দূরে অবস্থান করছে। এ জন্য বিদ্যালয়ের ভবনটি সরানো হচ্ছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান আহমেদ জানান, যেহেতু নদী ভাঙনে এ অঞ্চলের লোকজন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে লক্ষ্যে আমাদের প্রশাসনিকভাবে বিশেষ কিছু উদ্যোগ রয়েছে। পুরো বর্ষা মৌসুম জুড়েই ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে থেকে বিভিন্ন রকম সহায়তা করা হয়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/বেলাল/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর