গুহায় ১৭ দিন যা খেয়েছে কিশোররা

গুহায় উদ্ধারকারী ডুবুরিরা।

গুহায় ১৭ দিন যা খেয়েছে কিশোররা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলের থ্যাম লুয়াং গুহায় আটকা পড়া ১২ কিশোরের মধ্যে ১১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন আরও এক কিশোর এবং তাদের কোচ গুহায় অপেক্ষার প্রহর গুনছে। মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো অভিযান শুরুর পর ওই তিন কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তৃতীয় দিনের মতো অভিযান শুরু হয়।

গত ২৩ জুন থেকে গুহাটিতে ১২ কিশোর এবং তাদের কোচ আটকা পড়ে ছিলেন। আটকা পড়ার ১০ দিন পর তাদের খোঁজ পাওয়া যায়।

রোববার প্রথম অভিযান শুরু হয়। দু’দিনের অভিযানে মোট আট কিশোরকে উদ্ধার করা হয়।

সোমবার গুহার ভেতর থেকে চার কিশোরকে বের করে আনার পর দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়। গুহার প্রবেশপথ থেকে চার কিলোমিটার দূরে আটকা রয়েছে শেষ এক কিশোর ও তাদের কোচ একাপল চ্যান্তাওং।

আরও পড়ুন: গুহা থেকে ১০জন উদ্ধার, আটকা ২ কিশোর ও কোচ

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে গত ২৩ জুন থেকে ওই ১২ কিশোর ও তাদের কোচ একাপল চ্যান্তাওং কী খেয়েছিলেন। এ প্রশ্নের উত্তর জানিয়েছে, উদ্ধারকারী ডুবুরিরা।

তারা জানায়, আটকে পড়াদের কাছে কিছু খাবার আগে থেকে ছিল। সেই সব খাবার অল্প অল্প করে তারা খায়। আর পানি পান করেই মূলত তারা বেঁচে ছিল। ভেতরে খাবার পাঠানোর আগ পর্যন্ত কোচ তেমন কিছুই  খাননি। নিজে না খেয়ে কিশোরদের খেতে দিয়েছেন। এজন্য অবশ্য ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছেন একাপল। এরপর উদ্ধারকারীরা ভেতরে খাবার নিয়ে যান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গুহার মধ্যে কারও কারও শারীরিক অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় তাদেরকে লাল, হলুদ ও সবুজ গ্রুপে ভাগ করা হয়। সবচেয়ে দুর্বল যার অবস্থা তাকে লাল দলে রাখা হয়। সেভাবে তাদেরকে খাবার ও চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে অনেক কিশোর চিকেন ফ্রাই খেতে চাচ্ছিল। তাদেরকে আশ্বস্থ করা হয়েছিল। কিন্তু, অবস্থা বিবেচনায় তাদেরকে সেসব খাবার দেওয়া হয়নি।

উদ্ধারকারী দলে থাকা কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল আর্পকর্ন ইয়ুকংকাও বলেন, গুহার মধ্যে আটক কিশোরদের শুরুতে সহজে হজম হয় এমন কিছু খাবার দেওয়া হয়। এরপর প্রচুর মিনারেল সমৃদ্ধ উচ্চ শক্তিসমৃদ্ধ খাবার দেওয়া হয়। সেই অনুযায়ীই খাবার নিয়ে যাওয়া হয় গুহার মধ্যে।

টুইটারে একজন লিখেছেন, ২৫ বছর বয়সেও এই কোচ আজও শিশুর মতোই রয়ে গেছেন। তিনি নিশ্চিতভাবে ১২ শিশু-কিশোরের কাছে একটা বড় অনুপ্রেরণা হয়ে রয়েছেন।

ইয়োস নামের একজন লিখেন, সবাই যখন ১২ কিশোরকে নিয়ে ব্যস্ত, আসুন আমরা কোচ একাপলকে বাহবা দিই। দুই সপ্তাহ ধরে তিনি নিজে না খেয়ে নিজের ছাত্রদের খাইয়েছেন।

আরও পড়ুন: থাই গুহাবাস নিয়ে হলিউড চলচ্চিত্র!

মিলি ইয়ং লিখেছেন, দয়া করে কেউ কোচকে ভুলে যাবেন না। তিনি নিজের জীবন বাজি দিয়ে শিশুদের বাঁচিয়েছেন।

আরও পড়ুন: গুহায় আটকা ১৩ জনই উদ্ধার

সোমবার যখন চারজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলো তারা ভাত চেয়েছিল। তবে তাদেরকে ভাত খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। জানা গেছে, তাদেরকে প্রথম দেওয়া হয়েছে পাদ কারা পাও নামের মসলাযুক্ত এক ধরণের থাই খাবার ও মুরগীর মাংস। ইংরেজিতে খাবারটির নাম 'স্টির ফ্রাইড থাই হোলি বাসিল'। সামুদ্রিক মাছ, মুরগী, গরু বা শুকর, মরিচ, শিম জাতীয় সবজি, মাসরুম ও ডিম মিশিয়ে খাবারটি তৈরি করা হয় যা খুবই পুষ্টিকর। ১৯৪০ সালে থাইল্যান্ডে প্রথম খাবারটির প্রচলন হয়।


(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ

সম্পর্কিত খবর