নবীজি  (সা.) কখনো প্রতিশোধ নিতেন না

প্রতীকী ছবি

নবীজি  (সা.) কখনো প্রতিশোধ নিতেন না

মাইমুনা আক্তার

প্রতিশোধপরায়ণতা মানুষের দুনিয়া ও আখিরাত ধ্বংস করে দেয়। মানুষের আত্মার প্রশান্তি কেড়ে নেয়। এর প্রভাবে মানুষ বহু ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। সমাজে ঘটে যাওয়া বেশির বিশৃঙ্খলা ও হত্যাকাণ্ডগুলো প্রতিশোধপরায়ণতা থেকেই হয়।

অনেক সময় প্রতিশোধ নিয়ে গিয়ে মানুষ তার প্রতিপক্ষের নিষ্পাপ আত্মীয়-স্বজনের ওপর আক্রমণ করে বসে। মুমিন প্রতিশোধপরায়ণ হতে পারে না। পবিত্র কোরআনে মুমিনের গুণ উল্লেখ করতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা বড় বড় পাপ এবং অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বেঁচে চলে এবং রাগান্বিত হয়েও ক্ষমা করে। ’ (সুরা : শুরা, আয়াত : ৩৭)

অর্থাৎ কারো দ্বারা আক্রান্ত হয়ে রাগান্বিত হলেও প্রতিশোধ নেয় না।

প্রতিশোধপরায়ণতা নবীজির আদর্শ নয়, তাই যারা নিজেদের প্রিয় নবীজির উম্মত মনে করে, তাদের উচিত, এই ঘৃণ্য অভ্যাসটি ত্যাগ করা। নবীজি (সা.)-এর আদর্শে জীবন গড়া। প্রিয় নবী (সা.) ব্যক্তিগত বিষয়ে কখনো প্রতিশোধ নিতেন না। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.)-কে যখনই দুটি জিনিসের একটি গ্রহণের স্বাধীনতা দেওয়া হতো, তখন তিনি সহজটিই গ্রহণ করতেন, যদি তা গুনাহ না হতো। গুনাহ হতে তিনি অনেক দূরে অবস্থান করতেন। নবী (সা.) নিজের ব্যাপারে কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তবে আল্লাহর সীমারেখা লঙ্ঘন করা হলে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রতিশোধ নিতেন। (বুখারি, হাদিস : ৩৫৬০)

বর্তমানে মানুষের মধ্যে প্রতিশোধপরায়ণতা এত বেশি যে নুন থেকে চুন খসলেই নিজের মুসলিম ভাইয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে কুণ্ঠাবোধ হয় না, অথচ নবীজি এই প্রবণতা থেকে দূরে থাকার জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করে গেছেন।

হাসান বসরি (রহ.) বলেন, ফিতনার রাতে (অর্থাৎ জঙ্গে জামাল কিংবা জঙ্গে সিফফিনে) আমি হাতিয়ার নিয়ে বের হলাম। হঠাৎ আবু বকরাহ (রা.) আমার সামনে পড়লেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় যাচ্ছো? আমি বললাম, রাসুল (সা.)-এর চাচাতো ভাইয়ের সাহায্যার্থে যাচ্ছি। তখন তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যদি দুজন মুসলিম তলোয়ার নিয়ে পরস্পর সংঘর্ষের জন্য মুখোমুখি হয়, তাহলে উভয়েই জাহান্নামীদের মধ্যে গণ্য হবে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, হত্যাকারী তো জাহান্নামি। কিন্তু নিহত ব্যক্তির কী অপরাধ? তিনি বলেন, সেও তার বিপক্ষকে হত্যা করার সংকল্প করেছিল। ’ (বুখারি, হাদিস : ৭০৮৩)

মহান আল্লাহ সবাইকে ক্ষমাশীলতা অর্জনের তাওফিক দান করুন।