অনঢ় ইমরানকে ঠেকাতে পথে কন্টেইনার বসিয়েছে পাক সরকার

সংগৃহীত ছবি

অনঢ় ইমরানকে ঠেকাতে পথে কন্টেইনার বসিয়েছে পাক সরকার

অনলাইন ডেস্ক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকে নতুন নির্বাচনের দাবিতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থকেরা রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ (আজাদি মার্চ) শুরু করেছেন। এই কর্মসূচি ঠেকাতে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সরকার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে লংমার্চকে ঘিরে দেশটির অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।  

পাকিস্তানে বুধবার একটি খবর ছড়ায় যে দেশটির বর্তমান সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছেন ইমরান খান।

কিন্তু সেটিকে গুজব বলে অভিহিত করেন ইমরান। তিনি জানান, কোনো চুক্তি হয়নি । সমর্থকদের লং মার্চ নিয়ে রাজধানীতে আসার অনুরোধ করেন তিনি।  সঙ্গে ইমরান খান সতর্কতা দিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি না আদায় হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি ইসলামাবাদে থাকবেন।

এ ব্যাপারে ইমরান খান টুইটে বলেন, গুজব ছড়িয়েছে একটি চুক্তি হয়েছে। অবশ্যই এমন কোনো চুক্তি হয়নি। আমরা ইসলামাবাদের দিকে এগুচ্ছি এবং চুক্তির কোনো প্রশ্নই আসে না।

তিনি আরও বলেন, যতক্ষণ সংসদ (জাতীয় পরিষদ) ভেঙে দেওয়া ও নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা না করা হবে ততক্ষণ আমরা ইসলামাবাদে থাকব। ইসলামাবাদ ও পিন্ডির জনগণকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।  

ইমরান খান প্রথমে খাইবার পাখতুনকার ওয়ালিইনচার্জে হেলিকপ্টারে আসেন। এরপর সেখান থেকে দোতালা বাসে করে ইসলামাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন। এদিকে ইমরান খানের লং মার্চ ঠেকাতে ইসলামাবাদের প্রবেশ পথগুলোতে কন্টেইনার বসায় পাকিস্তান সরকার।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহকে পিটিআইয়ের লংমার্চ ঠেকাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা পেয়েই মাঠে নেমেছেন সানাউল্লাহ। তাঁর নির্দেশে পিটিআই নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি করছে পুলিশ। তল্লাশি অভিযানে বহু পিটিআই সমর্থক গ্রেপ্তার হয়েছেন। রাজধানী ইসলামাবাদ, লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিসহ অন্যান্য বড় শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইসলামাবাদে আসার প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ইসলামাবাদের ‘রেড জোনের’ নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছে শাহবাজ শরিফ সরকার। খবর প্রকাশিত হয়েছে, ইমরান খানকেও আটক করা হতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লংমার্চের অনেক ছবি ও ভিডিও ছড়িয়েছে। এতে দেখা যায়, পুলিশ পিটিআই নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বেশ কঠোর আচরণ করছে। এতে ক্ষোভ ছড়িয়েছে সরকারবিরোধীদের মধ্যে। মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে দুপক্ষ। কেউই কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। সংবাদ সম্মেলনে রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, পিটিআই নেতা-কর্মীদের কোনোভাবেই লংমার্চ করে ইসলামাবাদে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না।

পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, অনেক জায়গায় কন্টেইনারগুলো সরিয়ে ফেলেছে ইমরান খানের সমর্থকরা। ফলে তাদের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদের গাড়ির ওপর হামলা চালিয়ে তার গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে দেয় পুলিশ।

একইভাবে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইমরান খান পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠার আগেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়ার জন্য সরকারকে চাপ দিতে বিচার বিভাগ ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ সফল করার বিষয়েও অনড় তিনি। নিজের কর্মী-সমর্থকদের সরকার ও পুলিশের কঠোর অবস্থানে আতঙ্কিত না হতে আহ্বান জানিয়ে তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, তারা (সরকার) ঠিক কতজনকে গ্রেপ্তার করতে পারবে?

সূত্র: ডন, জিও নিউজ, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

news24bd.tv/আলী