পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে এসেছে ‘আল্লাহ আরশে সমাসীন’। ইরশাদ হয়েছে, ‘পরম দয়ালু (আল্লাহ) আরশে সমাসীন। ’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ৫)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। ’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৫৪)
আল্লামা সামআনি (রহ.) বলেন, “আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের বিশ্বাস হলো—কোনো আকার ও অবয়ব ছাড়া আরশে সমাসীন হওয়া আল্লাহর একটি বৈশিষ্ট্য।
এর ওপর বিশ্বাস স্থাপন করা ওয়াজিব। ইমাম মালিক (রহ.)-সহ অন্য মনীষীরা বলেছেন, ‘আল্লাহ আরশে সমাসীন’ এই কথার ওপর ঈমান স্থাপন করা ওয়াজিব এবং এই বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদআত। ” (তাফসিরে সামআনি : ২/১৮৮)ইয়াহইয়া ইবনে ইয়াহইয়া বলেন, আমরা মালিক বিন আনাস (রহ.)-এর কাছে ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আবু আবদুল্লাহ! কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ আরশে সমাসীন।
এসব স্থানে পূর্বসূরি আলেমদের অনুসরণ করে চুপ থাকাই মুমিনের জন্য নিরাপদ। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহর আরশে সমাসীন হওয়া নিয়ে মানুষের বহু মত আছে। কিন্তু এটা মতামত প্রকাশের স্থান নয়। এখানে মালিক, আওজায়ি, সাওরি, লাইস (রহ.)-এর মতো পুণ্যাত্মা পূর্বসূরিদের অনুসরণই কাম্য। তাঁরা আল্লাহর কালামের ওপর বিশ্বাস স্থাপন করতেন কোনো অবয়ব দান ও তুলনা করা ছাড়াই। ’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৩/৪২৬)
ইমাম বুখারি (রহ.)-এর শিক্ষক আল্লামা নুআইম বিন হাম্মাদ (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে তাঁর কোনো সৃষ্টির সঙ্গে তুলনা করল সে কুফরি করল, যে ব্যক্তি আল্লাহ নিজের জন্য যেসব গুণ প্রমাণিত করেছেন তা অস্বীকার করল সে কুফরি করল। আল্লাহ নিজের যেসব গুণ বর্ণনা করেছেন এবং তাঁর রাসুল তাঁর যেসব গুণ বর্ণনা করেছেন তাতে কোনো সাদৃশ্য নেই। ’ (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৩/৪২৬)
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আল্লাহ আরশে সমাসীন, তবে তা আল্লাহর জন্য আবশ্যক নয়। ’ (শরহু ওয়াসিয়্যাতি আল-ইমাম আবি হানিফা, পৃষ্ঠা ৮৭)
আল্লামা আবু আমর দানি বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আরশ সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে সব সৃষ্টির ওপর বিশেষ মর্যাদা ও সম্মান দান করেছেন। অতঃপর তার ওপর যেভাবে ইচ্ছা সমাসীন হয়েছেন তাঁর সত্তায় কোনো ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই। ’ (আর-রিসালাতুল ওয়াফিয়া, পৃষ্ঠা ১৩৯)