অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামী আটক

প্রতীকী ছবি

অন্ত:সত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ, স্বামী আটক

অনলাইন ডেস্ক

নরসিংদীর রায়পুরায় যৌতুক চেয়ে না পাওয়ায় আট মাসের অন্ত:সত্ত্বা এক গৃহবধূকে কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার শাশুড়ি ও স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার (২৮ মে) দিবাগত রাত ১১টার দিকে রায়পুরা উপজেলার মহেষপুর ইউনিয়নের বেগমাবাদ গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

রোববার (২৯ মে) দুপুরে ওই গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজন স্বামীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও শাশুড়ি পলাতক রয়েছে।

নির্যাতনে নিহত ওই গৃহবধূর নাম লুৎফা বেগম (২৫)। তিনি রায়পুরার মহেষপুর ইউনিয়নের মতিউরনগর এলাকার একরাম হোসেনের মেয়ে ও বেগমাবাদ এলাকার নুরুজ্জামান মিয়ার স্ত্রী। এই দম্পতির নুসরাত নামের তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে।

অভিযুক্ত দুজন হলেন- নিহত লুৎফা বেগমের স্বামী নুরুজ্জামান মিয়া (৩৩) এবং শাশুড়ি কালা বেগম (৫০)।

তারা একই ইউনিয়নের বেগমাবাদ এলাকার বিল্লাল হোসেনের ছেলে ও স্ত্রী।

স্থানীয়রা জানান, সাড়ে চার বছর আগে পারিবারিকভাবে মহেষপুর ইউনিয়নের বেগমাবাদ গ্রামের মোল্লাবাড়ির নুরুজ্জামানের সঙ্গে মতিউরনগর এলাকার লুৎফা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সোফা ও খাটসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র যৌতুক হিসেবে দাবি করেছিল বরের পরিবার।

বিয়ের কিছুদিন পরই এসব আসবাবপত্র বরের পরিবারকে দেওয়ার কথা থাকলেও দিতে পারেনি কনের পরিবার। এ নিয়ে লুৎফাকে প্রায়ই শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, শনিবার রাতে আট মাসের অন্ত:সত্ত্বা লুৎফা বেগমের সঙ্গে যৌতুক নিয়ে তর্কে জড়ান স্বামী নুরুজ্জামান এবং শাশুড়ি কালা বেগম। তর্কের একপর্যায়ে তারা দুজনে মিলে লুৎফার হাত-পা ও গলাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।  

এ সময় তার তলপেটে লাথি মারা হলে রক্তে ভেসে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তার তিন বছর বয়সী মেয়ে নুসরাতের সামনেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে একটি ওড়না বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। খবর পেয়ে রাত একটার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে লুৎফার লাশ উদ্ধার করে রায়পুরা থানার পুলিশ। পরে রোববার দুপুরে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান জানান, নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে আমরা নিশ্চিত হতে পারব। এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজন নিহত গৃহবধূর স্বামীকে আটক করে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।  

news24bd.tv/কামরুল