চট্টগ্রামে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় প্রেমিককে এসিডে ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় দায়ের করা এক মামলায় প্রেমিকা ও তার মাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন।
বুধবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ আসামিদের অনুপস্থিতিতে এ রায় দেন। আর এরমধ্য দিয়ে ২৭ বছর আগে দায়ের করা এই মামলার রায় দিলেন আদালত।
দণ্ডিতরা হলেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের হালুয়াছড়ি এলাকার বাসিন্দা মাছুমা খাতুন ও তার মেয়ে মোস্তফা বেগম। ঘটনার সময় মোস্তফার বেগমের সঙ্গে একই এলাকার বাসিন্দা নুরুল আবছারের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী জানান, মেয়ের পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা মানেনি ছেলের পরিবার। যে কারণে ১৯৯৫ সালের ২৭ জুলাই বিকেল সাড়ে ৪টায় নুরুল আবছারকে ডেকে আনে মোস্তফা বেগম।
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আসামিরা নারী, সেটি বিবেচনায় নিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার কথা রায় ঘোষণার সময় আদালত জানিয়েছেন। তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও দুই বছরের সাজাও দিয়েছেন আদালত। তবে সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিই পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালের ২২ জুলাই বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নুরুল আবছার এসিড নিক্ষেপের শিকার হন। ওইদিনই নুরুল আবছারের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। ঘটনার পর প্রেমিকার মা মাছুমা খাতুনকে পুুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে জামিনে বেরিয়ে তিনি পালিয়ে যান। আর তার মেয়ে মোস্তফা বেগম শুরু থেকেই পলাতক আছেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ দুজনকে আসামি করে ১৯৯৬ সালের ১৫ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১৯৯৯ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এই মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার আদালত এই রায় দেন।
news24bd.tv/কামরুল