বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ইসলাম ও আলেম-ওলামাদের জন্য যা করেছে, অতীতের কোনও সরকার তা করেনি বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। শনিবার (৪ জুন) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক ও আলেমদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, আলেম-ওলামাদের শত বছরের পুরনো দাবি ছিল বাংলাদেশে একটি স্বতন্ত্র ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি লোকমানুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জসিম উদ্দিন তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী দরবার-এ-আস্তানা শরিফের পীর গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, মেহেরিয়া মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির দাবি বহু বছরের পুরনো। খালেদা জিয়া কিংবা বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনও এই দাবি ছিল। উনি আলেম-ওলামাদের নিয়ে ভাত খাওয়াতেন, কিন্তু দাবি পূরণ করেননি। আমাদের রাঙ্গুনিয়ার কৃতি সন্তান মাওলানা আহমদ শফী সাহেব আলেম-ওলামাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন, যেন কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেন। ’
মন্ত্রী বলেন, ‘অনেকে ভেবেছিলেন, আমাদের নেত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, কিন্তু বাস্তবায়ন হবে না। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনা কওমি সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। স্বীকৃতি দেওয়ার পর অনেকে বলেছেন— স্বীকৃতি দিয়েছেন, কিন্তু চাকরি হবে না, চাকরি পেলেও বেতন পাবেন না। কিন্তু আমাদের নেত্রী শুধু কওমি সনদের স্বীকৃতিই দেননি, তাদের চাকরিও দিয়েছেন। তারা এখন সরকারি বেতন পাচ্ছেন। এটি কল্পনারও বাইরে ছিল। ’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে সারা দেশে এক লাখ মসজিদভিত্তিক মক্তব করা হয়েছে, রাঙ্গুনিয়াতেও দুই শতাধিক মসজিদভিত্তিক মক্তব প্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রতিটি মক্তবের আলেম ৫২’শ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। এটি আলেম সমাজ কখনও ভাবেনি। দারুল আরকাম এবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রতিটিতে দু’জন করে শিক্ষক ১২ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। এখন হজে যাবার সময় ঢাকায় ইমিগ্রেশন হয়ে যাচ্ছে। সৌদি আরব গিয়ে আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকতে হচ্ছে না। '
আলেমদের উদ্দেশে ড. হাছান বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছে, যা কেউ কখনও ভাবেনি। ব্রিটিশ আমলে দেশ বিভক্ত হয়েছিল— মুসলমানদের জন্য একটি দেশ, হিন্দুদের জন্য আরেকটি দেশ। সেই পাকিস্তান আমলেও জেলা-উপজেলায় সরকারিভাবে কোনও মসজিদ হয়নি। ’
‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার ইসলামের জন্য এবং আলেম-ওলামাদের জন্য যে কাজগুলো করেছে, আলেমরা অন্যদের কাছে তা দয়া করে বলবেন, এই ফরিয়াদ রইলো’ নিবেদন করে তথ্যমন্ত্রী নিজ নির্বাচনি এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় ইসলামের খেদমতে কাজের বিবরণ দেন।
ড. হাছান বলেন, ‘আপনারা আমাকে এমপি নির্বাচিত করার পর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ইসলাম এবং আলেম-ওলামাদের খেদমত করার জন্য। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগে আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন ও আমাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২০টিরও বেশি নতুন মসজিদ ভবন তৈরি করা হয়েছে। এভাবে প্রতিটি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা ও হেফজখানায় সরকারি অনুদানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সহায়তাও পৌঁছানো হয়েছে। ’
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন— উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, ইউএনও আতাউল গণি ওসমানি, পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাওলানা সৈয়দ আইয়ুব নুরী এবং রাঙ্গুনিয়ার নূরুল উলুম কামিল মাদ্রাসা, সরকারি কলেজ, আলমশাহপাড়া কামিল মাদ্রাসা, রাণীর হাট আল আমিন হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, খন্ডলিয়াপাড়া মাদ্রাসা ও কোদালা মাদ্রাসার শিক্ষকরা।
news24bd.tv/আলী