মহানবীকে কটূক্তি করা সেই নূপুরের পাশে কঙ্গনা

সংগৃহীত ছবি

মহানবীকে কটূক্তি করা সেই নূপুরের পাশে কঙ্গনা

অনলাইন ডেস্ক

মহানবী হজরত মোহাম্মদ (স.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন ভারতে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নূপুর শর্মা। তার মন্তব্যের জেরে মুসলিম বিশ্বের রোষের মধ্যে পড়েছে দেশটি, যা ভারতের জন্য কূটনৈতিক দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রায় ১০ দিন আগে এক টেলিভিশনের বিতর্ক অনুষ্ঠানে মহানবি (স.)-কে নিয়ে নূপুর শর্মার অবমাননাকর মন্তব্য ভারতে এবং ভারতের বাইরে ১২টির বেশি মুসলিম দেশের মুসলমানদের চরম ক্ষুব্ধ করেছে। বিশেষত সৌদি আরব, ইরান, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েতের মতো মুসলিম দেশগুলো তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে গত রোববার (৫ জুন) নূপুর শর্মাকে দল থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে বিজেপি। এবার সেই নূপুর শর্মার পাশে দাঁড়ালেন বলিউডের তারকা অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত।

ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে কঙ্গনা লিখেছেন, নূপুর তার ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করেছেন; তাকে লক্ষ্য করে সব রকম হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হিন্দু ধর্মের দেবতাদের অপমান করা হলে আমরা আদালতে যাই।

দয়া করে এই কাজটি করুন; নিজেকে ডন হিসেবে দেখানোর প্রয়োজন নেই। এটি আফগানিস্তান না। এখানে কার্যকরী একটি সরকার রয়েছে। যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত। যারা এটা ভুলে গেছেন তাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই এই পোস্ট।

এদিকে দল থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার হওয়ার আগ পর্যন্ত 'বিজেপির সরকারি মুখপাত্র' ছিলেন নূপুর শর্মা। তিনি দলের উঠতি এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় একজন মুখপাত্র ছিলেন, যিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের প্রতিনিধিত্ব এবং সরকারের পক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার জন্য রাতের পর রাত টেলিভিশনের বিতর্ক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন।

২০০৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন পড়ার সময় নূপুর শর্মা তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন। তখন তিনি হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) আন্দোলনের ছাত্র শাখা অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর ছাত্র ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।

এরপর লন্ডনের স্কুল অব ইকনমিকস থেকে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক আইন বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি পাশ করে ২০১১ সালে ভারতে ফেরার পর রাজনীতির জগতে নূপুর শর্মার দ্রুত উত্থান হতে থাকে। সুবক্তা এবং রূঢ়ভাষী নূপুর শর্মা ইংরেজি এবং হিন্দি দুই ভাষাতেই দক্ষতা এবং দৃঢ়তার সঙ্গে তার মতামতের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বিজেপির কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ২০১৩ সালে দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপির মিডিয়া কমিটিতে তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়।

এর দু'বছর পরে যখন নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তখন তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিপক্ষে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কেউ ভাবতেই পারেনি, ওই নির্বাচনে তিনি কেজরিওয়ালকে হারিয়ে দেবেন। নির্বাচনে তার ব্যাপক উদ্দীপনামূলক প্রচারাভিযান তাকে দলে আরও সামনের সারিতে নিয়ে আসে। তিনি দিল্লিতে দলের সরকারি মুখপাত্র নিযুক্ত হন এবং ২০২০ সালে তাকে বিজেপির 'জাতীয় মুখপাত্র' করা হয়।

বরখাস্ত হওয়ার পর এক বিবৃতিতে নূপুর শর্মা লেখেন, তিনি 'নিঃশর্তভাবে' তার মন্তব্য প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। তবে তিনি ওই মন্তব্য করার পেছনে একটা যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করেন, ওই অনুষ্ঠানে হিন্দুদের দেবতা শিবকে অনবরত যেভাবে অপমান আর অসম্মান করা হচ্ছিল, তার জবাব দিতে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন।

news24bd.tv/আলী